প্রশ্ন: বিশ্ব উষ্ণায়ন কাকে বলে? বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণ, বিশ্ব উষ্ণায়নের ক্ষতিকর প্রভাব, বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণের দুটি উপায়, গ্রীন হাউস এফেক্ট, গ্রিন হাউস গ্যাস কাকে বলে? নিচে পোস্টিতে এই সকল প্রশ্ন গুলির যথাযথ উত্তর দেওয়া হয়েছে।
বর্তমান সময়ে বিশ্বে যে যে পরিবেশগত সমস্যা গুলি রয়েছে তাদের মধ্যে একটি অন্যতম সমস্যা হলো বিশ্ব উষ্ণায়ন বা Global Warming। এটি আসন্ন ভবিষ্যতে জলবায়ুর মাধ্যমে এমন একটি সমস্যা আসতে চলেছে যা প্রক্রিয়া গত ভাবে অনেকটাই এখনকার গ্রীন হাউস এফেক্ট এর সাথে তুলনীয়।
এখন থেকেই এই সমস্যাটিকে আমাদের নিয়ন্ত্রণে আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আজ থেকে প্রায় একশো বছর আগে আমাদের পৃথিবীতে যে বায়ুমণ্ডল ছিল তার সাথে এখনকার বায়ুমন্ডল এর কোনো তুলনা হয় না, অর্থাৎ বায়ুমন্ডল এর সম্পুর্ন ভিন্ন একটি পরিবর্তন ঘটে গেছে।
কিন্তু কেন আজ আমাদের বায়ুমন্ডল এর এই অবস্থা? এই অবস্থার জন্য কারা দায়ী? এই পরিবর্তনের প্রভাব কি হতে পারে? কিভাবে এই পরিবর্তন কে আটকানো যেতে পারে ? আজকে আমরা এই সব প্রশ্ন (বিশ্ব উষ্ণায়ন কাকে বলে?) গুলি নিয়ে বিস্তারিত ভাবে জানার চেষ্টা করবো। তার জন্য সবার আগে আমাদের জানতে হবে বিশ্ব উষ্ণায়ন এর ধারণা সবার প্রথম কিভাবে পাওয়া গিয়েছিল ?
Table of Contents
বিশ্ব উষ্ণায়ন এর সর্বপ্রথম ধারণা :-
সুইডিশ এর একজন ভূ- বিশেষজ্ঞ Svante Arrhenius 1896 সালে সর্বপ্রথম একটি দাবি তুলে ধরেন জে জীবাশ্ম জ্বালানির যে দহন তা কোনো এক সময়ে গিয়ে পৃথিবীর উষ্ণতা অতিরিক্ত মাত্রায় বৃদ্ধি পেতে বাধ্য করবে। তিনি বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ এবং বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা তার মধ্যে একটি সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন কার্বন ডাই অক্সাইড সূর্য থেকে আগত ইনফ্রারেড রশ্মি কে শোষণ করার ক্ষমতা রাখে তাই এর ফলে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের গড় উষ্ণতা 15°c হারে বৃদ্ধি পায়। এবং এই পদ্ধতিটি আমাদের কাছে বর্তমানে গ্রীন হাউস এফেক্ট বলে পরিচিত। বিজ্ঞানী Arrhenius এও বলেছেন জে ভূপৃষ্ঠে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়লে তাপমাত্রা আরও 5°c হারে বাড়তে থাকবে।
আরেক ভূ বিজ্ঞানী টমাস চেম্বারলিন সহ Arrhenius একটি গণনার মাধ্যমে বলেছিলেন যে পৃথিবীতে এই কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধির মূল কারণ হলো মানুষ, তাহলে এটা বলেই যায় যে মানুষের কার্যকলাপের জন্যই ধীরে ধীরে পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এর পর Arrhenius পৃথিবীর এই উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণ জনমানব এর সামনে তুলে ধরলেও অনেক ভূবিজ্ঞানীরা তার সাথে একমত ছিলেন না। কিন্তু সাল 1985 নাগাদ অস্ট্রেলিয়ার ভিলাচে শহরে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যেখানে প্রথমবার গ্রীন হাউস এফেক্ট এবং global warming বা বিশ্ব উষ্ণায়ন সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়। বিশ্ব উষ্ণায়ন কাকে বলে? বা বিশ্ব উষ্ণায়নের সজ্ঞা টি নিচে দেওয়া হলো।
বিশ্ব উষ্ণায়ন কাকে বলে ?
বিশ্ব উষ্ণায়ন বলতে বোঝায়: সূর্যের রশ্মি ক্ষুদ্র তরঙ্গ রূপে ভূপৃষ্ঠে এসে পড়ে, যার ফলে ভূপৃষ্ঠ ক্রমশ ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হতে থাকে। এরপর সূর্য থেকে আগত সেই রশ্মি ভূপৃষ্ঠের সাথে প্রতিফলিত হয়ে দীর্ঘ তরঙ্গ রূপে পুনরায় মহাকাশে ফিরে যায়। কিন্তু এরূপ অবস্থায় মানুষের দ্বারা সৃষ্টি এমন কিছু কিছু অবিবেচক কাজের ফলে বায়ুমন্ডলের সর্বনিম্ন স্তর অর্থাৎ troposphere এ গ্রীনহাউস গ্যাস গুলির পরিমাণ অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে চলেছে।
এর ফলে সূর্য থেকে আগত রশ্মির দৈর্ঘ্য তরঙ্গ রূপে মহাশূন্যে ফিরে যাওয়ার সময় ভূপৃষ্ঠে থাকা সেই সমস্ত গ্রীনহাউস গ্যাস গুলির দ্বারা শোষিত হয়ে যাচ্ছে, যার ফলে বায়ুমণ্ডলের নিচের স্তর গুলির উষ্ণতা ক্রমশই অস্বাভাবিক হারে বেড়েই চলেছে। এই হলো বিশ্ব উষ্ণায়ন কাকে বলে এর সংজ্ঞা।
এভাবেই পৃথিবীর সাধারণ উষ্ণতা থেকে অস্বাভাবিক ভাবে ক্রমশ উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে ভূ- বিজ্ঞানীরা বিশ্ব উষ্ণায়ন বা global warming বলেন। অতীতে পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত মোট 4 টি হিমযুগ সংঘটিত হয়েছিল। তার মধ্যে সবার শেষ হিমযুগ ঘটেছিল আজ থেকে প্রায় 1200 বছর আগে, যেটি আমাদের কাছে প্লাইস্টোসিন যুগ নামে পরিচিত।
এই প্লাইস্টোসিন যুগ শেষ হওয়ার পর থেকে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। কিন্তু এখানে উল্লেখিত একটি বিষয় হলো শিল্প বিপ্লব এর আগে পৃথিবীর উষ্ণতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল কিন্তু শিল্প বিপ্লব এর পর থেকে ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা খুব দ্রুত গতিতে বাড়তে শুরু করল।
কারণ শিল্প বিপ্লব এর পর থেকেই বাতাসে অনেক বেশি পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড সহ আরো নানান বিষাক্ত গ্যাস গুলির পরিমাণ বাড়তে থাকলো। এই গ্রিন হাউস গ্যাসের ক্রমশ বৃদ্ধি এবং গ্রীন হাউস এফেক্ট এর ফলাফল হলো বিশ্ব উষ্ণায়ন বা global warming।
এছাড়াও শুধু তাই নয় ভুবিজ্ঞানী দের মত অনুযায়ী শিল্প বিপ্লবের পর থেকে 250 বছর এর মধ্যে পৃথিবীতে মোট 1.5° সে উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং যদি এর পরেও এই একই হারে বাতাসে ক্রমশ গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গত হতে থাকে তাহলে বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছেন মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই পৃথিবীর গড় উষ্ণতা 2 – 5° c এ গিয়ে দাঁড়াতে পারে।
নিচে গ্রিনহাউস গ্যাস গুলি এবং তাদের গ্রিনহাউস ইফেক্ট এ কতটা অবদান রয়েছে সেগুলি বলা হলো:
গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম | সাংকেতিক নাম | অবদান |
জলীয় বাষ্প এবং মেঘ | H2O | 36 থেকে 72% |
কার্বন ডাই-অক্সাইড | CO2 | 9 থেকে 26% |
মিথেন | CH4 | 4 থেকে 9% |
ওজোন | O3 | 3 থেকে 7% |
বিশ্ব উষ্ণায়ন কাকে বলে এর সংজ্ঞাটা জানার পর এবার বিশ্ব উষ্ণায়ন কারণগুলি জানা যাক।
বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণ :-
বিশ্ব উষ্ণায়ন বা global warming কে এক কথায় পৃথিবী পৃষ্ঠের অতিরিক্ত তাপ বলা যেতে পারে যার ফলে বিশ্বের তাপমাত্রার ক্রমাগত বৃদ্ধি ঘটছে। জলবায়ুর এই পরিবর্তনের মূল নেতৃত্ব দেয় এই global warming বা বিশ্ব উষ্ণায়ন। জলবায়ুর এই পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীতে সমুদ্রপৃষ্ঠের পরিমাণ বাড়তে পারে এবং নানান প্রজাতিও বিলুপ্ত হতে পারে। এই সমস্ত কারণ গুলির মধ্যে কয়েকটি প্রধান প্রধান কারণ নিম্নে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো –
জীবাশ্ম জ্বালানি –
যানবাহন ব্যবহার, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ইত্যাদি কর্মক্ষেত্র গুলিতে অতিরিক্ত পরিমাণে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা হচ্ছে। যার ফলে সেখান থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড বাতাসে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বেড়েই চলেছে। এই অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বেড়ে চলা কার্বন ডাই অক্সাইড বিশ্ব উষ্ণায়ন বৃদ্ধি এর অন্যতম একটি প্রধান কারণ।
বৃক্ষচ্ছেদন –
জ্বালানির জন্য প্রয়োজনীয় কাঠের ব্যবহার, জনবসতি বৃদ্ধি , কৃষি জমির জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা, শিল্পকারখানা গুলির প্রসার ইত্যাদি নানান কারণে অতিরিক্ত মাত্রায় গাছ কাটার ফলে কার্বন ডাই অক্সাইড বনভূমি দ্বারা শোষিত হতে পারছে না। যার ফলে বাতাসে অক্সিজেন এর মান কমছে এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড এর মান বাড়ছে।
মিথেন গ্যাসের অতিরিক্ত ব্যবহার –
মিথেন হলো প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাস গুলির মধ্যে অন্যতম। কৃষি জমিতে জমে থাকা জল , গবাদি পশুর মল মুত্র এবং বিভিন্ন পচনশীল আবর্জনা থেকে সৃষ্ট মিথেন গ্যাস বিশ্ব উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ক্লোরোফ্লোরো কার্বন ব্যবহার –
এখনকার দিনে প্রচুর পরিমাণে রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশন মেশিন, রুম হিটার ইত্যাদি ইলেকট্রনিক শিল্প গুলি থেকে প্রচুর পরিমাণে ক্লোরোফ্লোরো কার্বন নির্গত হয় এবং প্রসাধনী সামগ্রী তৈরিতেও প্রচুর পরিমাণে ক্লোরোফ্লোরো কার্বন কার্বন ব্যবহৃত হয় যা বিশ্ব উষ্ণায়ন বাড়াতে মারাত্মক ভূমিকা গ্রহণ করে।
বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণের দুটি উপায় :-
বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণের উপায় গুলি নিচে উল্লেখ করা হলো –
জলবায়ুর অমূল্য পরিবর্তন :-
যদি এভাবে দিনের পর দিন ক্রমাগত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বাড়তে থাকে তাহলে এর ফলে পৃথিবীর জলবায়ুর উপর এর অনেক ক্ষতিকর একটি প্রভাব পড়বে। আশঙ্কা করা হয়েছে জে নিরক্ষীয় ও ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশ গুলিতে উষ্ণতা বৃদ্ধি পাবে।
মরুকরণ –
পৃথিবীতে বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে ধীরে ধীরে মরুভূমি বিস্তারিত হতে থাকবে। যার ফলে মরুকরণ ঘটবে।
সমুদ্রের জলের পরিমাণ বৃদ্ধি –
ধীরে ধীরে যতো তাপমাত্রা বাড়বে তত পার্বত্য অঞ্চল এবং মেরু অঞ্চল গুলির বরফের পরিমাণও বাড়তে থাকবে। সুতরাং উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে বরফ গলছে এবং সেই বরফ গলা জল থেকে সমুদ্রে জলের পরিমাণ বাড়ছে।
এই বিষয় বিজ্ঞানীদের মত অনুসারে পৃথিবীর এখন গড় তাপমাত্রা 1°c বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন জলতল এর পরিমাণ 10- 15 সেমি আছে এবং সাল 2050 নাগাদ জলের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে সেই জল এর পরিমাণ 50 – 100 সেমি তে গিয়ে দাঁড়াতে পারে।
ফসল উৎপাদন এর হ্রাস –
বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে কখনও কখন অতিবৃষ্টি এবং কখনও কখনও অনাবৃষ্টির ফলে কৃষি জমিতেও ফসল উৎপাদনের পরিমাণ কমে যাবে।
বিশ্ব উষ্ণায়নের রোধ মূলক পদ্ধতি :-
• আলোর পরিবর্তন –
আমরা নিয়মিত জে বাল্ব গুলি ঘরে ব্যবহার করি তার বদলে একটি কমপ্যাক্ট ফ্লুরোসেন্ট লাইট বাল্ব ব্যবহার করলে এক বছরে 150 পাউন্ড এর মত কার্বন ডাই অক্সাইড সাশ্রয় করা যেতে পারে।
• বর্জ্য পদার্থের পুনর্ব্যবহার –
আপনার বাড়িতে প্রতিদিনের বর্জ্য পদার্থ গুলিকে যদি আপনি আবার পুনরায় ব্যবহার করেন তাহলে আপনি বছরে 2000 পাউন্ড এর মত কার্বন ডাই অক্সাইড সাশ্রয় করতে সক্ষম হবেন।
• যানবাহন এর ব্যবহার –
গ্লোবাল ওয়ার্মিং বৃদ্ধির জন্য বায়ুদূষণ হলো একটি প্রধান কারণ। তাই যতটা সম্ভব হাঁটার চেষ্টা করতে হবে। যানবাহনের ব্যবহার কমাতে হবে। যদি আপনি 1 মাইল পর্যন্ত বিনা যানবাহন এ যেতে পারেন তাহলে আপনি 1 পাউন্ড কার্বন ডাই অক্সাইড সাশ্রয় করতে পারবেন।
• বৃক্ষ রোপন –
বিশ্ব উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো বৃক্ষচ্ছেদন। তাই বিশ্ব উষ্ণায়ন রোধ করার জন্য গাছ লাগানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গাছই একমাত্র উপায় যার মাধ্যমে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষিত হতে পারে।
• প্রাকৃতিক শক্তির ব্যবহার –
বিশ্ব উষ্ণায়ন হ্রাসের একটি অন্যতম এবং জরুরী উপায় হলো প্রাকৃতিক শক্তির উৎস। এখনকার ইলেকট্রনিক শক্তি গুলির ব্যবহার কমিয়ে বিভিন্ন জে সমস্ত প্রাকৃতিক শক্তি গুলি আছে সেগুলোকে ব্যবহার করতে হবে। যেমন সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, বায়োগ্যাস, জোয়ার ভাটার শক্তি, বায়োমাস ইত্যাদি।
• ঠান্ডা জলের ব্যবহার –
যদি আপনি ঠান্ডা জল বেশি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে এক বছরে আপনি 500 পাউন্ড কার্বন ডাইঅক্সাইড বাঁচাতে পারবেন। তাই যতটা সম্ভব ঠান্ডা জল দিয়ে কাপড় ধোয়ার, ঠান্ডা জল পান করার এবং দৈনিক যাবতীয় কাজ গুলি ঠান্ডা জল দিয়েই সম্পন্ন করার চেষ্টা করবেন।
• ইলেকট্রিক দ্রব্যের কম ব্যবহার –
বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন কম্পিউটার, টিভি, রেডিও ইত্যাদির ব্যবহার কমাতে হবে। এর ফলে সেখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন , জ্বালানি সংরক্ষণ করা যেতে পারে। এবং এর ফলে বাতাস থেকে হাজার টন কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ সাশ্রয় হবে।
গ্রীন হাউস এফেক্ট
বায়ুমণ্ডলে থাকা কিছু ক্ষতিকারক গ্যাস ভূপৃষ্ঠে আসা সূর্যের আলোক রশ্মিকে পুনরায় মহাকাশে ফিরে যেতে বাধা সৃষ্টি করে। এই প্রক্রিয়ায় বারবার হওয়ার ফলে এবং সূর্য রশ্মি পুনরায় মহাকাশে ফিরে না যাওয়ার ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
এই বিষয়টি গ্রীন হাউস এফেক্ট নামে পরিচিত। এই গ্রীন হাউস এফেক্ট কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। যেমন- গ্রীন হাউস এফেক্ট কাকে বলে, গ্রীন হাউস এফেক্ট এর কারণ। এর আগে আলোচনা করা হয়েছে- বিশ্ব উষ্ণায়ন কাকে বলে?
গ্রীন হাউস এফেক্ট কাকে বলে
বায়ুমন্ডলে উপস্থিত কিছু ক্ষতিকারক গ্যাস যেমন- মিথেন, ক্লোরোফ্লোরো কার্বন, কার্বন ডাই-অক্সাইড ইত্যাদি গ্যাস গুলি বেড়ে যাওয়ার ফলে বায়ুমন্ডলের সর্বনিম্ন স্তর তথা ট্রপোস্ফিয়ারের উষ্ণতা বৃদ্ধি পেতে থাকছে। এই প্রক্রিয়া কে গ্রীন হাউস এফেক্ট বলে।
এই গ্রিন হাউস গ্যাস গুলি পৃথিবীতে আসা সূর্যের আলোর রশ্মিকে পুনরায় মহাকাশে ফিরে যেতে বাধা সৃষ্টি করে।
গ্রিন হাউস গ্যাস কাকে বলে?
যে সকল গ্যাসের প্রভাবে গ্রীন হাউস এফেক্ট ঘটে থাকে সেই সকল গ্যাসকে গ্রিনহাউস গ্যাস বলে।
কিছু গুরুত্ব পূর্ন গ্রীন হাউস গ্যাস গুলি হল- carbon dioxide, methane, nitrous oxide, water vapor ইত্যাদি।
ভবিষ্যতে যদি এভাবেই এই সকল গ্রীন হাউজ গ্যাস গুলি পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে তাহলে এক বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় তিন থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়ে যেতে পারে। আমাদের সকলের দরকার এই বিশ্ব উষ্ণায়ন ও গ্রীন হাউস ইফেক্ট এর বিষয় টিকে নজর রেখে এবং পৃথিবীর সুন্দর তাকে বজায় রাখার ব্যবস্থা গুলি গ্রহণ করে, বিশ্ব উষ্ণায়ন টিকে এড়িয়ে যেতে হবে।
এই পর্যন্ত ছিল আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়: বিশ্ব উষ্ণায়ন কাকে বলে?। আশা রাখি আপনারা বিশ্ব উষ্ণায়ন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলেন। এবং এই পোস্টটি আপনাদের নতুন অনেক তথ্য পেতে সাহায্য করেছে।
অনুসারী শিল্প কাকে বলে? | বিভক্তি ও অনুসর্গের মধ্যে পার্থক্য |
মোনালিসা ছবিটি কার আঁকা? | ডব্লিউবিসিএস এক্সাম প্যাটার্ন |
NASA full form | পিএইচডি এর ফুল ফর্ম |
বিশ্ব উষ্ণায়নের দুটি প্রধান উদাহরণ দাও?
বিশ্ব উষ্ণায়নের দুটি প্রধান উদাহরণ:
1) বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পর্বত ও মরু অঞ্চলে উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়ে সমুদ্র জলতর ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈজ্ঞানিকরা জানিয়েছেন পৃথিবীর এক ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে সমুদ্র জলতল প্রায় ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
2) বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের বন্টনে পরিবর্তন দেখা দিয়েছে, এই বৃষ্টিপাতের বন্টনের ফলে কোথাও অনাবৃষ্টি আবার কোথাও অতিবৃষ্টি প্রভাব দেখা দিয়েছে। যা সরাসরি ভাবে কৃষি জমির ফসল উৎপাদন হ্রাস করছে।
বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য কোন গ্যাস দায়ী?
বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য দায়ী গ্যাস গুলি হলো- কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড প্রভৃতি।
আমি Sharmila, MoneyGita একজন Author। বর্তমানে আমি গ্রাজুয়েশন সম্পূর্ণ করছি এবং লেখালেখি আমার ভালোবাসার একটি কাজ। এই প্লাটফর্মে আমি নিয়মিত আমার লেখালেখির কাজ করে থাকি। সরকারি স্কুলের ছাত্রদের পড়ায়, সিলেবাস অনুযায়ি পরীক্ষার প্রশ্ন-উত্তর করিয়ে থাকি।