ইতিহাসের জনক কে – কাকে বলা হয় ?

প্রশ্ন: ইতিহাসের জনক কে? ইতিহাসের জনক কাকে বলা হয় এবং তাকে কেন ইতিহাসের জনক বলা হয়। ইতিহাসের জনক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করো।   

ইতিহাসের জনক কে

ইতিহাসের জনক-হেরোডোটাস
জন্ম-484 খ্রিস্টপূর্বাব্দ
মৃত্যু-425 খ্রিস্টপূর্বাব্দ
জন্মস্থান-Halicarnassus, Turkey
The Father Of History” called-Herodotus
ইতিহাসের জনক- হেরোডোটাস

ইতিহাসের জনক কে: ইতিহাস জগতে প্রাচীন গ্ৰিকবিদ হেরোডোটাসকে ইতিহাসের জনক বলে। ইতিহাসবিদ হেরোডোটাস তার কাজ এবং উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের মাধ্যমে একটি বিশেষ পদ্ধতির অনুসন্ধান করেন যেখানে তিনি তার ঐতিহাসিক ধাতুসমূহ সংগ্রহ করেন এবং ইতিহাস লিখন ধারা অনুযায়ী সাজান এ কারণে তাকে ইতিহাসের জনক বলে।

ইতিহাসের জনক কাকে বলা হয়

ইতিহাসের জনক কাকে বলা হয়
ইতিহাসের জনক কাকে বলা হয়

ইতিহাসের জনক গ্ৰিকবিদ হেরোডোটাস বলা হয়।‌ হেরোডোটাসকে “The father of History” হিসেবে গণ্য করা হয়। এই সম্মান তাকে সর্বপ্রথম খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতকে the ancient Roman orator Cicero প্রদান করেন। এই সকল কারণ গুলির জন্য হেরোডোটাসকে ইতিহাসের জনক বলা হয়।‌

ইতিহাসের জনক হেরোডোটাসের জীবনী

প্রাচীন গ্রিক ইতিহাসবিদ হেরোডোটাস এর জন্ম হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৪৮৪ সারিয়া, এশিয়া মাইনরে। এবং তার মৃত্যু হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৪২৫ তে কালিব্রিয়া অথবা মেসিডোনে শহরে। তার পিতার নাম হলো লেক্সেস‌ (Lyxes) ও মাতা হলেন ড্রায়োটাস (Dryotus)। এছাড়াও হেরোডোটাসের একটি ভাই ছিল Theodorus। 

হেরোডোটাস তার উল্লেখযোগ্য কর্মের মাধ্যমে ইতিহাসের জনক হন এবং তার ভাই Theodorus একজন ইতিহাসবিদ ছিলেন। হেরোডোটাস “The History” বইটি লেখার জন্য তার নাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং  তিনি খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।‌

হেরোডোটাস শৈশবকালে হেলিকানসাস এ খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৫  এর সময় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি যে শহরটিতে বাস করতেন সেই শহর তখন পারস্যের অধীনে থাকায় তাকে পারসিয়ান বলে ধরা হয় । “সুদা”  একটি ঐতিহাসিক সূত্র  থেকে জানা যায় যে তার পিতা লেক্সস ও তার ভাই Theodorus ছিলেন। 

এছাড়াও হেরোডোটাস এর আগে যারা বই লিখেছেন তারা কোন একটি নির্দিষ্ট পথ অনুসরণ করে লেখেননি। হেরোডোটাস প্রথম ব্যক্তি যিনি একটি নির্দিষ্ট পথ অনুসরণ করে ঐতিহাসিক সব ধাতুসমূহ সংগ্রহ এবং ইতিহাস লিখন দ্বারা সাজান। তিনি নানান বই লিখেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো “The History” তিনি এই বইটির জন্য জনপ্রিয় হয়েছিলেন। 

তবে তার বইগুলোতে বেশ কিছু কাল্পনিক ঘটনা ও অসত্য ঘটনা পাওয়ার কারণে তাকে সমালোচিত অভিযোগের সম্মুখীন হতে হয়। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের মাঝামাঝি সময়ে হ্যালিকার্নাসাস ফারসি সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত হন এবং এই প্রদেশের শাসনকর্তা ছিল লিগ ডামিস। হেরোডোটাসের পরিবার লিকডামিষের শাসনের বিরোধিতাকরার জন্য তার পরিবারকে সামজ দ্বীপে নির্বাসিত করা হয়। যুবক অবস্থায় একবার তিনি তার নিজস্ব শহরে ফিরে এসেছিলেন এক অপ্রত্যাশিত পারস্য বিদ্রোহে অংশ নেওয়ার জন্য। তারপর আর কোন দিন তিনি ফিরে আসেননি তার শহরে। 

পরবর্তী কালে হেরোডোটাস কোন একটি নির্দিষ্ট স্থানে স্থির হওয়ার পরিবর্তে বিভিন্ন জায়গাগুলিতে ভ্রমণ করে সময় কাটাতে থাকেন অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান অর্জন করার জন্য। তিনি মিশর ভ্রমণ করেছেন। তারপর তিনি তায়ার এবং পরে ফোরাত থেকে ব্যাবিলনে ভ্রমণে চলে যান । পরে তিনি পেরি ক্লিয়ান এথেন্স এ চলে যান। 

 এই ভ্রমণ পথে যাদের সাথে সাক্ষাৎ ও কথা বলেছিলেন সেই কথাগুলো একটি খাতায় লিখে রাখতেন। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের গল্প কাহিনী শুনে শুনে জ্ঞান অর্জন করতেন। যখন তিনি ভ্রমণ শেষ করেন তখন তিনি অ্যাথেন্সে এসে বসবাস শুরু করেন। তিনি সেই জায়গার মানুষদের সাথে কথা বলতেন।

তিনি সারাজীবন মূলত একটি কাজের পিছনে ব্যয় করেছেন সেটি হল “The History” এর রচনা। এই বইটি রচনা করতে  মূলত সমস্ত সাধনা ও তার শ্রম এবং নিজের অর্জিত জ্ঞানকে নিংড়ে দিয়েছেন। এতে তিনি মূলত গ্রীক ফারসি যুদ্ধের  উত্থান ও ফলাফল বর্ণনা করেছেন।

তার ঐতিহাসিক গুরুত্বের পর তার নিজস্ব জীবন সম্পর্কে তেমন জানা যায়নি। তার লেখা ইতিহাস গুলোর অধিকাংশরই বিষয় ছিল ক্রোসাস, সাইরাস, কেমবাইসেস, এসমা ডিস, মহান দারিয়ুস। দারিয়াস এবং জার্জিস এর জীবন এবং ম্যারাথনের যুদ্ধ, থের্মোপিলাইয়ের যুদ্ধ, আর্টেমিজিয়ামের যুদ্ধ সালামিসের যুদ্ধ প্লাটায়য়ার যুদ্ধ এবং মিকিলির যুদ্ধ। তার দেওয়া অনেক তথ্য ইতিহাসবিদ এবং প্রত্নতাত্ত্বিকদের দ্বারা সঠিক প্রমাণিত হয়েছে।

ভারতের নিম্নবর্গের ইতিহাসের জনক কে?

ভারতের নিম্নবর্গের ইতিহাসের জনক হলেন রণজিৎ গুহ তিনি একজন বাঙালি ভারতীয় ইতিহাসবিদ ছিলেন। তিনি মূলত ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী নিয়ে গবেষণা করতেন। ইতিহাসবিদ রণজিৎ গুহ 1923 সালে 23 শে মে Backergunje district এর Siddhakati গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বর্তমানে এটি বাংলাদেশের রয়েছে।

উপসংহার 

মূলত প্রাচীন গ্রিক ইতিহাসবিদ প্রথম ব্যক্তি ছিলেন যিনি ইতিহাসের জনক হিসেবে পরিচিত তিনি। নানান বই লিখেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো “The History” বইটি। এই ব‌য়ের মাধ্যমে অনেক খ্যাতি অর্জন করেন। ইতিহাসে হিরোডোটাসের স্থান এবং গুরুত্ব তিনি যে ঐতিহ্যের মধ্যে কাজ করেছেন তা অনুযায়ী বোধ করা যায়।

আশা রাখি আমাদের আজকের প্রশ্নের উত্তরটি- ইতিহাসের জনক কে? ইতিহাসের জনক কাকে বলা হয় ? আমরা আপনাদের সঠিক ভাবে দিতে পেরেছি।

অনান্য় প্রশ্নগুলি-

উদীয়মান শিল্প কাকে বলে?

Leave a Comment