প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় ফুল কী ? প্রত্যেক টি স্বাধীন দেশ বা রাজ্যের একটি নিজস্ব নির্বাচন ক্ষমতা রয়েছে। পাকিস্তান, বাংলাদেশ এগুলি যেরকম এক একটি স্বাধীন দেশ সে রকম ভারত বর্ষ হল একটি স্বাধীন দেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ হলো এই স্বাধীন দেশের অন্তর্গত একটি রাজ্য।
একটি স্বাধীন দেশ বা রাজ্যের এই নির্বাচন ক্ষমতা অনুযায়ী আমরা জানি প্রত্যেকটি দেশের মতো ভারতেও প্রধান পশু, প্রধান পাখি বা প্রধান ফুল আছে। এবং যেহেতু পশ্চিমবঙ্গ হলো ভারতের মধ্যে একটি রাজ্য তাই এখনকার ও কিছু প্রধান প্রধান জীবজন্তু বা ফুল ফল কে জাতীয় আকার দেওয়া হয়েছে।
সেই রকম আজ আমরা পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় এর নাম ফুল কি টা নিয়ে আলোচনা করবো। এই পোস্ট টির মাধ্যমে আমরা জানবো যে পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় ফুল কী ? সেই ফুল কি কাজে ব্যবহার করা হয় ? সেই ফুলের বৈশিষ্ট্য ? আরো নানান ধরনের প্রশ্ন সম্পর্কে।
পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় ফুল কী ?
পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় ফুল এর নাম হলো শিউলি। শিউলি ফুল হলো নিকটানথিস প্রজাতির একটি বৃক্ষ। এই শিউলি ফুলের বৈজ্ঞানিক বা বোটানিক্যাল নাম হল- “Nyctanthes Arbor-tristis Linn”। এই শিউলি ফুলটিকে অন্যান্য নামেও জানা যায় যেমন– হরসিঙ্গার, শেফালি। পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় ফুল শিউলির কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য গুলি হল-
এই জাতীয় ফুল টি এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণ পূর্ব থাইল্যান্ড থেকে শুরু করে পশ্চিমের নেপাল, বাংলাদেশ এবং ভারত জুড়ে ছেয়ে আছে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুরি তেও এই শিউলি ফুল কে সেখানকার জাতীয় ফুল হিসাবে ধরা হয়।
এই ফুলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এই ফুলের গাছটি মধ্যপ্রদেশ এবং হিমালয় পার্বত্যের নিচে পাদদেশে প্রচুর পরিমাণে জন্মায় এই ফুলটি খুবই সুগন্ধি হয় যার রং সাদা এবং এই ফুলটি বিশেষত রাতের বেলায় ফোটে এবং সকাল হলে শুকিয়ে যায়।
জাতীয় ফুল শিউলির ধরন –
আমাদের পশ্চিমবঙ্গে এই শিউলি ফুল মূলত শরৎ কালেই ফুটে থাকে। এই ফুলটি দেখতে সাদা রং এর হয় এবং এতে পাঁচটি থেকে সাতটি সাদা রং এর পাপড়ি থাকে ও পাপড়ি গুলির মাঝে থাকে একটি হালকা কমলা রঙের বৃন্ত।
যেহেতু এটি একটি সাদা ফুল তাই এটি রাতের বেলায় তেই ফোটে এবং সকাল হতেই ফুল গুলি গাছ থেকে ঝরে পড়ে। এই শিউলি ফুল এর গাছ কে বিষন্ন তরু এই নামেও জানা যায়। এই ফুলটি শরৎকাল ছাড়াও বারোমাস ই কম বেশি ভাবে ফুটতে থাকে।
শিউলি গাছ টি দেখতে খুব একটি বড় হয় না কিন্তু এই গাছটি অনেক বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এই গাছটি অন্তন 10 মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে এবং এর কান্ড খুব মোটা কিংবা শক্ত হয় না মাঝারি শক্ত ধরনের হয়। এই গাছের পাতা গুলো খুব বেশি হলেও 5 থেকে 7 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
খুব সাধারণ ভাবেই পাতাগুলো সবুজ রঙের হয়ে থাকে। গাছের কচি পাতা গুলিতে খাঁজ কাটা থাকে এবং পাতার সামনের দিকটা ছুঁচলো ধরনের হয়। কিন্তু পুরনো পাতা গুলিতে কোনো খাঁজ কাটা থাকে না। এছাড়াও প্রত্যেকটি ডাল এর সামনে ফুল ফুটে থাকে।
শিউলি ফুল এর কয়েকটি উপকারিতা :-
শিউলি ফুল এর কয়েকটি উপকারিতা গুলি হল নিম্নরূপ:-
- কৃমির ঔষধ হিসেবে শিউলি গাছ এর পাতা খুবই ভালো ভাবে কাজ করে।
- শিউলি ফুল এর বীজ খুশকি মুক্ত করার জন্য খুবই উপকারী।
- নিয়মিত কাশির সমস্যায় ভুগলে সেক্ষেত্রেও শিউলি পাতার রস খাওয়া খুব উপকার।
- এছাড়াও যদি একটুতেই ঠান্ডা লেগে যাওয়ার সমস্যা থাকে তাহলে ও শিউলি পাতার রস কাজে দেয়। দিনে দুবার এই শিউলি পাতার রস হালকা গরম করে খেলে শরীরের পক্ষে খুব উপকার হয়।
- যাদের পায়ে বাতের ব্যথা আছে তারা রোজ এক কাপ জল নিয়ে তাতে দুটি শিউলি পাতা এবং দুটি তুলসী পাতা যদি জলে ফুটিয়ে খান তাহলে সেই ক্ষেত্রে অনেক উপকার পাবেন।
- আমাদের শরীরে যে সমস্ত ব্যাক্টেরিয়া গুলি আছে যারা বিভিন্ন ধরণের রোগ সৃষ্টি করে সেগুলিকে প্রতিরোধ করার জন্য শিউলি পাতার রস অনেক উপকারী। কারণ শিউলী পাতার রস এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান।
অতএব প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় ফুল এর নাম কী এর উত্তরটি হল শিউলি এবং এই শিউলি ফুলের কিছু বিশেষ গুণ ও গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা গুলির সম্পর্কে আপনারা আশা রাখি অবগত হয়েছেন।
অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর:
- পশ্চিমবঙ্গের কোথায় রেল ইঞ্জিন তৈরির কারখানা আছে?
- পশ্চিমবঙ্গের রাজধানীর নাম কি
- বায়ুমন্ডলের কোন স্তরে মেরুজ্যোতি দেখা যায়
I’m Sourav, (BA) Graduate. Specialized content writer. Get accurate information from Moneygita.