তোমার বিদ্যালয়ের জীবনের প্রথম দিন প্রবন্ধ রচনা [PDF]

[wptb id="6161" not found ]

তোমার বিদ্যালয়ের জীবনে প্রথম দিন প্রবন্ধ রচনাটি নিচে লিখিত হল এবং এই রচনার PDF টি নিচে দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে সংগ্রহ করতে পারবে।

তোমার বিদ্যালয়ের জীবনের প্রথম দিন রচনা

আমাদের সকলের জীবনে আনন্দদায়ক স্মৃতি হল ছোটবেলা। দাদু মা-বাবা প্রায় সকলের কাছে গল্প শুনতে বসলে নিজেদের ছেলেবেলারও গল্প শোনাতেন। বেশ মজাই লাগত শুনতে। আজ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বেশ কিছুটা সময় নিজেকে পিছিয়ে নিয়ে গেলাম সেই ছোটবেলায়। 

সেই ছোটবেলার স্মৃতিতে উঠে এলো আমার বিদ্যালয়ের জীবনের প্রথম দিন। সেই চির স্মরণীয় দিন বিদ্যালয়ের জীবনের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি রচনা তুলে ধরলাম।

ভূমিকা

বিদ্যালয় শব্দটা শুনলেই মনে আনন্দের সঞ্চার হয়। ভীষণ ভালো লাগার জায়গা আমাদের সবার প্রিয় বিদ্যালয়। প্রতিদিনের বিদ্যালয়ে জীবনে বিদ্যালয়ের পোশাক পড়ে যাওয়া পড়াশোনা সাথে সাথে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে খেলা গল্প আলোচনা ইত্যাদি নানা কর্মকান্ড করা। 

এই বিদ্যালয়ের জন্যই আমরা একটা নাম পেয়েছিলাম- ছাত্র বা ছাত্রী। বিদ্যালয়ে গিয়ে এই ছাত্র বা ছাত্রী হয়ে ওঠার প্রথম দিনটি সবারই চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ছাত্র-ছাত্রী জীবনের দীর্ঘ পথ ধরে আমরা মানুষ হয়ে উঠি। 

এই ছাত্রী জীবনের প্রথম দিন মানে বিদ্যালয়ের প্রথম দিন আমার জীবনেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অনেক উত্তেজনা একটু ভয় নিয়ে প্রথম দিন বিদ্যালয়ে পা রেখেছিলাম সেই দিনটি আজ আমার রচনার বিষয়বস্তু। 

প্রস্তুতি পর্ব

বিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য বেশ কিছুদিন আগে থেকেই মায়ের আমায় নিয়ে পরিশ্রম শুরু হয়ে যায়। আমিও মায়ের কাছে বেশ কয়েকবার পরীক্ষায় পাশ ফেল করি তারপর বিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাল্টের দিনে, কবে থেকে বিদ্যালয়ে আসতে হবে সেটি জানিয়ে দেন। দুর্গাপুরের মধ্যে আমাদের বিদ্যালয়ের বেশ নাম আছে। আমার বিদ্যালয়ের নাম দুর্গাপুর গার্লস হাই স্কুল। আমার উত্তীর্ণ হওয়াতে মা বেশ খুশি হন।

আর মায়ের খুশিতে আমার মনের অজানা ভয়টা খানিক কমে যায়। এরপর বিদ্যালয়ের পোশাক ব্যাগ জুতা, মোজা, নতুন পেন্সিল, রাবার, বই ইত্যাদির আগমন হতে থাকে। বাড়িতে নতুন নতুন জিনিস পেয়ে আমি তো একদম আত্মহারা।

এইসব জিনিস নারাচারা করতে করতে আমার অপেক্ষার দিন গোনা শুরু হলো। আর মাকে প্রশ্ন করি যে কবে যাব স্কুলে।

প্রথম দিন

অবশেষে অপেক্ষার অবসান করে সেই দিনটি উপস্থিত হল। সেই দিন ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে নতুন স্কুলের পোশাক পড়ে টিফিন ও বই গোছানো নতুন ব্যাগ কাঁধে নিয়ে মায়ের সাথে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করলাম।

মা আমাকে ক্লাসে বসিয়ে বাড়ি চলে গেলেন। ক্লাস আস্তে আস্তে আমার মতো ছাত্রীতে ভরে উঠলো। আমি ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হই। তারপর ক্লাসে কেউ কেউ কান্না জুড়ে দিল আমারও মন বেশ ভারী হয়ে এল। বিদ্যালয়ে দুই কর্মচারী এসে আমাদের ভুলাবার চেষ্টা করতে থাকল। তা করতে করতে ক্লাস শুরু। 

শিক্ষক-শিক্ষিকা ও বন্ধুবান্ধব

ক্লাসরুমে ভরে ওঠার কিছুক্ষণ পর প্রধান শিক্ষকের সাথে ক্লাস টিচার, অন্যান্য টিচার এলেন ও আমাদের ভয় কাটিয়ে প্রার্থনা লাইনে নিয়ে গিয়ে দাঁড় করালেন। 

তারপর জাতীয় সংগীত স্কুলের বড় দিদিদের সাথে গাইলাম ও শপথ নিলাম যে আমরা মন দিয়ে পড়াশোনা করব বড়দের ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কথা মেনে চলব ও সম্মান করবো। প্রার্থনা শেষে ক্লাসে গিয়ে বসলাম ক্লাস টিচার এলেন আর আমাদের নাম জিজ্ঞেস করলেন। 

আমাদের সবাইকে একে অপরের সাথে হাত মিলিয়ে পরিচয় করিয়ে একটু মজার ছলেই কিশলয় বই পড়ানো শুরু করলেন। প্রথম পিরিয়ড শেষ হওয়ার পর আমার বেশ কিছু বান্ধবী হয়ে গেল। অনেক কিছু বান্ধবীর মধ্যে এক বান্ধবী রুমা তার পেন্সিল বাক্স ছিল সবচেয়ে আকর্ষণীয়। 

সেই পেন্সিল বক্স আমাদের কয়েকজনের মনকে অবাক করে দেয়। সেই বাক্স নিয়ে মনে যা যা প্রশ্ন আসে আমরা রুমাকে করতে থাকি ও কিছু প্রশ্নের উত্তর ও দেয় এই সব করতে করতে পরের পিরিয়ড শুরু। 

বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ দেখা

প্রথম পিরিয়ড শেষ হওয়ার পর। দ্বিতীয় পিরিয়ডে নতুন এক শিক্ষিকা ও কর্মচারী এলেন ও আমাদের বিদ্যালয় ঘোরাবার জন্য ক্লাসের বাইরে নিয়ে যান। ওই কর্মচারী আমাদের বাথরুম, টিফিন, খাওয়ার জায়গা, খেলার মাঠ দেখিয়ে দেন। এত কিছু দেখে আমার মন আনন্দে ভরে ওঠে। 

যদিও বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ অনেক বড় সেটা সম্পূর্ণ না দেখালেও বেশ ভালো লেগেছিল আমাদের সকলের। কর্মচারী কাকিমা ও টিচার কিছু জায়গায় আমাদের প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেন ওই জায়গা গুলি দেখে আমার মনে বেশ কৌতুহল জাগে। 

সেই কৌতূহল নিয়ে আবার ক্লাসে ঢুকলাম। ক্লাসে এসে টিচার সহজ পাঠ বই একটু পড়ালেন ও ক্লাস শেষ করে চলে গেলেন এরপর টিফিনের ঘন্টা পড়ল আর সেই কর্মচারী কাকীমা এসে আমাদের টিফিনের জায়গায় নিয়ে গেলেন।

আমরা সবাই ভাগাভাগি করে টিফিন খেলাম টিফিন খেয়ে একটু খেলাধুলা করে নিলাম এই সময়টাতে আমরা একে অপরের সাথে বেশ মিলেমিশে গেলাম। খেলার মাঠে একটা বড় বট গাছ আছে যার ঝুড়ি নেমেছে সেই বটগাছ আমাদের সবার নজর কেড়েছিল সেদিন। এরপর ক্লাসে ফিরে নতুন শিক্ষিকা আসার জন্য দরজায় মন আটকে রাখলাম সবাই। 

ছুটির পালা

তৃতীয় পিরিয়ডে টিচার এসে বেশ কিছু গল্প বললেন তারপর আবার ঘন্টা পরে আর কর্মচারী কাকীমা এসে আমাদের লাইন করে স্কুলের গেটে নিয়ে যান। প্রথম দিন একটু তাড়াতাড়ি আমাদের ছুটি হয়ে যায়। এত কিছু স্মৃতির পাতায় দেখতে দেখতে মনে হচ্ছে যেন এইতো কালকেরই কথা। 

উপসংহার

একের পর এক ক্লাসে উত্তীর্ণ হয়ে আজ আমার বিদ্যালয়ের সাথে নয় বছরের সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছে। আজ আমি নবম শ্রেণীতে পড়ি। নতুন ক্লাসে নতুন বইখাতার সাথে সাথে আমার বিদ্যালয় কেউ যেন প্রতিবার নতুন করে পাই। বট গাছের ঝুড়িগুলো আজও মন ভুলায়।

স্কুলের গেটটা আজও যেন আমাদের সবার বিদ্যালযয়ের প্রথম দিন মনে রাখে। প্রতিদিন আমাদের ছুটির সময় বলে কাল আবার এসো বন্ধু নতুন দিন শুরু করি। আমার বিদ্যালয় আমার গর্ব আমার ভালোবাসা।

রচনাটির লেখিকা- রিয়া দাস।

___________________________________________

অন্যান্য রচনা ও সাজেশন পেতে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপ জয়েন করতে পারো।

_______________________________________________

“তোমার বিদ্যালয়ের জীবনের প্রথম দিন” রচনাংশে আমি আমার বিদ্যালয়ের প্রথম দিনের স্মৃতি দিয়ে এই রচনাটি রচিত করলাম। যদিও প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর বিদ্যালয়ের প্রথম দিনটির অভিজ্ঞতা এক রকম হয় না।

সকলের অনুভূতি সমান হয় না, অভিজ্ঞতা সকলের আলাদা আলাদা হয়. তাই তোমরা এই রচনাটিকে নিজেদের মতো একটু সাজিয়ে নিতে পারো। নিজেদের ছোটবেলার প্রথম বিদ্যালয়ের দিনটির কিছু স্মৃতি, কিছু অভিজ্ঞতা যোগ করতে পারো। নিজের অনুভূতি দিয়ে রচনাটি লিখলে আরো বেশি জীবন্ত হয়ে উঠবে তোমাদের কছে।

Next: চরিত্র গঠনে খেলাধুলার ভূমিকা প্রবন্ধ রচনা

তোমার বিদ্যালয়ের জীবনের প্রথম দিন PDF

তোমাদের বিদ্যালয়ের জীবনের প্রথম দিন” রচনাটির একটি PDF রেডি করা হয়েছে তোমাদের জন্য. তোমরা নিচে দেওয়া লিংক থেকে এটি সংগ্রহ করতে পারো।

তোমাদের বিদ্যালয় জীবনে প্রথম দিন রচনাটি তোমাদের ভালো লাগলে অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবে।

Leave a Comment