ভাষা কাকে বলে, বৈশিষ্ট্য, কত প্রকার ও কি কি

ভাষা কাকে বলে? ভাষার বৈশিষ্ট্য কি কি এবং ভাষা কত প্রকার? ভাষাকে ঘিরে এই তিনটি প্রধান প্রশ্নের উত্তর এই আর্টিকেল থেকে তোমরা পাবে, অতএব আর্টিকেলটিকে শেষ পর্যন্ত পড়ো যার মাধ্যমে তোমরা জানতে পারবে ভাষা কি? ভাষার বৈশিষ্ট্য এবং ভাষার প্রকারভেদ গুলি সম্পর্কে।

ভাষা কাকে বলে

প্রত্যেক প্রাণী কিছু শব্দের সমষ্টির দ্বারা তাদের মনের ভাব প্রকাশ করার চেষ্টা করে। আধুনিক সভ্যতায় শ্রেষ্ঠতম জীব হল মানুষ। তাই বিদ্যা বুদ্ধিতে শ্রেষ্ঠতম মানুষ যখন অত্যন্ত সাবলীল ভাবে বাকযন্ত্রের সাহায্যে কিছু অর্থপূর্ণ শব্দসমষ্টি নির্গত করে। যা তার মনের ভাবকে সম্পূর্ণরূপে ব্যক্ত করে তাকে আমরা ভাষা বলি

ভাষার বৈশিষ্ট্য

ভাষার কয়েককটি প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি হলো

  1. যে কোন শব্দ নিবন্ধ বা ধ্বনি সমষ্টিকে আমরা ভাষা বলবো না। যতক্ষণ না এটি মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করছে। 
  2. অর্থপূর্ণ শব্দসমষ্টি বা মুখ নিঃসৃত ধ্বনিই একমাত্র ‘ভাষা’ রূপ পায়।
  3. সঠিক ব্যাকরণ গত ও কাঠামোগত শব্দসমষ্টি যখন মনের ভাবকে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করে তখন তাকে আমরা ভাষা নামাঙ্কিত করি।
  4. কোন ব্যক্তির মনের ভাব বা এক বা একাধিক ব্যক্তির আলোচনার ও সংস্কৃতির আদান-প্রদানের মাধ্যম হিসেবে যে সঠিক অর্থ পূর্ণ ধ্বনি আমাদের মুখ নিঃসৃত হয়। তাকে ভাষা বলে।

ভাষার উদাহরণ

ভাষা কত প্রকার ও কি কি

ভাষা দুই প্রকার, যথা- লেখ্য ভাষা ও মৌখিক ভাষা। বাংলা ভাষার ব্যবহারিক প্রয়োগের ভিত্তিতে আমরা দুটি ভাগে ভাগ করতে পারি। 

  1. লিখিত ভাষা বা লেখ্য ভাষা।
  2. মুখের ভাষা বা মৌখিক ভাষা।
ভাষার প্রকারভেদ

লেখ্য ভাষা কাকে বলে

লেখ্য ভাষা বলতে বোঝায় যে ভাষা লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তাকে লেখ্য ভাষা বলে। এই লেখ্য ভাষা প্রকাশ করতে লেখনি যন্ত্রে প্রয়োজন হয় উদাহরণস্বরূপ কালি, কলম, মোবাইল, কম্পিউটার ইত্যাদি।
এই লেখ্য ভাষার দ্বারা মূলত বই পুস্তক চিঠি ইত্যাদি লেখা হয়। লেখ্য ভাষাকে আবার দুই ভাগে বিভক্ত যথা সাধু ভাষা এবং চলিত ভাষা।

মৌখিক ভাষা কাকে বলে

মৌখিক ভাষাকে আবার দুইটি ভাগে ভাগ করা হয় যথা আঞ্চলিক কথ্য ভাষা এবং সর্বজনীন কথ্য ভাষা।

সাধারণত মনে করা হয় বাংলা ভাষার জন্ম মাগধী প্রাকৃত বা মগধী থেকে। জন্ম লগ্ন থেকে কিন্তু বর্তমান বাংলা ভাষার লক্ষ্য বা মৌখিক যে রূপ ব্যবহার করি তা ছিল না। বহু বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে এরূপ আমরা পায়। 

বাংলা ভাষার উদ্ভব সম্বন্ধে মনে করা হয় এটি এসেছে সংস্কৃত ভাষা থেকে কিন্তু ভাষাবিদ ডঃ সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় কিছু প্রমাণ থেকে আমরা জানতে পারি বাংলা ভাষার উৎপত্তি মানোধী বা মাগধী প্রাকৃত থেকে, যা ইন্দো ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর অংশবিশেষ।

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসামের কিছু অঞ্চলের মানুষজন নিজেদের মনের ভাব ব্যক্ত করেন বাংলা ভাষার মাধ্যমে। বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যে বাংলা ভাষার ব্যবহার হয়। তার সর্বত্র রূপ কিন্তু এক নয়। বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন রূপে আমরা বাংলা ভাষাকে পাই।

  • রাডো উপভাষা
  • বঙ্গীয় উপভাষা 
  • ঝাড়খন্ডী উপভাষা 
  • রাজবংশী উপভাষা

মাতৃভাষা কাকে বলে

আমরা আমাদের জন্মের পর থেকে আমাদের নিকট আত্মীয় বা আশেপাশের পরিবেশ থেকে যে ভাষা শুনি। বিশেষত আমাদের মা বাবা যে ভাষায় কথা বলেন তা আমাদের মাতৃভাষা নামে পরিচিত।

আমরা আমাদের মা-বাবাকে ও নিকট আত্মীয়কে বাংলা ভাষায় কথা বলতে শুনি। তাই আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। আমরা এই ভাষাতেই কথা বলি বুঝি লিখি অর্থাৎ আমাদের মনের ভাব ব্যক্ত করি। এই ভাষাতে আমাদের সাংস্কৃতির আদান-প্রদান করি এই ভাষাতে।

ভাষা কাকে বলে?

আমাদের বাগযন্ত্রের দ্বারা কতগুলি শব্দ নিবন্ধকে আমরা যখন সঠিক রূপদানের মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করতে সক্ষম হয় তখন সেই মনের ভাব প্রকাশক শব্দ নিবন্ধকে ভাষা বলা হয়। 

ভাষা কত প্রকার ও কি কি?

ভাষা দুই প্রকার, লেখ্য ভাষা ও মৌখিক ভাষা।

কথ্য ভাষা কয় প্রকার ও কি কি?

কথ্য ভাষা দুই প্রকার। দুই প্রকার কথ্য ভাষা হলো (1) আঞ্চলিক কথ্য ভাষা এবং (2) সর্বজনীন কথ্য ভাষা।

ভাষার বিজ্ঞানসম্মত বিশ্লেষণের শাস্ত্রকে কি বলে?

ভাষার বিজ্ঞানসম্মত বিশ্লেষণের শাস্ত্রকে ব্যাকরণ বলে।

Next: ভূমিকম্প কাকে বলে?

আর্টিকেলের শেষে বলতে পারি তোমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ভাষা কাকে বলে? ভাষার বৈশিষ্ট্য গুলি এবং ভাষা কত প্রকার ও কি কি এই তিনটি প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর গুলি পেয়েছ। এছাড়াও বাংলা ব্যাকরণ সম্বন্ধিত তোমাদের মনে কোন জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারো, আমরা তাদের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

Leave a Comment