এই পোস্টের মূল কথা- স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা- about 75th Independence Day (15 August 2022) জানুন ১৪ই আগস্ট রাতের রহস্য।
আমাদের ভারতবর্ষ, আমাদের হিন্দুস্তান আমাদের জন্মস্থান, আমাদের মাতৃভূমি।
আর আমরা আমাদের এই মাতৃভূমির স্বাধীন জনজাতি।
– Sharmila
Table of Contents
স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা
স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা: আমরা সকলেই জানি, আজ ১৫ই আগস্ট ২০২২ সোমবার আমাদের ৭5 তম স্বাধীনতা দিবস। 1947 খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু লালকেল্লায় আমাদের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতার বার্তা বহন করেন। স্বাধীনতা দিবস নিয়ে অন্যান্য কথা-
- আজকের দিন ১৯৪৭ সালে ১৫ই আগস্ট পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু দিল্লির লালকেল্লায় ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা দিবসের সূচনা করেন।
- প্রায় ২০০ বছর ধরে ব্রিটিশদের শাসনে থাকার পর 19৪৭ সালের ১৫ আগস্টে, আমাদের দেশ ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করেছিল।
- ২০২১ সালে ভারতের ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয় এবং আজ ২০২২ সালে ৭5 তম স্বাধীনতা দিবস পালন পালিত হচ্ছে।
- আজকের এই শুভ দিনটিতে ভারতের সকল সরকারি স্থানগুলিতে অফিস, আদালত, স্কুল, কলেজ সহ পাড়ায় পাড়ায় ক্লাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে খুশির বার্তা বহন করা হয়।
স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নিয়ম:
১৫ই আগস্ট হলো ভারতের স্বাধীনতা দিবস এই স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল কেল্লায় ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে থাকেন এবং জাতীয়তাবাদী বক্তব্য রাখেন এই পতাকা উত্তোলন শুধুমাত্র পতাকা উত্তোলনই নয়।
এই পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে আমরা সেইসব শহীদদের স্মরণ করি যারা আজে দেশ স্বাধীনের জন্য তাদের আপনজন এমনকি নিজের জীবন ত্যাগ করতেও পিছপা হননি। তাই এই জাতীয় পতাকাকে আমাদের সকলকে সম্মান করা উচিত ভালোবাসা উচিত এবং এই পতাকা উত্তোলনের মধ্য প্রত্যেকটি ভারতবাসীর মধ্যে দেশাত্মবোধ ও জাতীয়তা বোধ থাকা উচিত।
এই পতাকা শুধু পতাকা নয়, মানুষের স্বাধীনতার অঙ্গীকার। এই পতাকা হল ভারতের মাতৃসম । তাই সূর্যোদয়ের সাথে সাথে এই পতাকা উত্তোলন করা উচিত। ১৫ই আগস্ট অর্থাৎ স্বাধীনতা দিবসে সমস্ত সরকারি অফিস-আদালত, সরকারি কর্মক্ষেত্র, বিদ্যালয়, কলেজ সমস্ত স্থানে ভারতীয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা উচিত এবং সূর্যাস্তের সাথে সাথে এই পতাকা নামিয়ে দিতে হয়।এই পোস্টের মূল কথা- স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা।
স্বাধীন ভারতীয় পতাকার রং গুলোর গুরুত্ব:
ভারতের স্বাধীনতা দিবসে উত্তোলিত পতাকার এটি নিজস্বতা রয়েছে। এই পতাকাটিতে তিনটি রং দেখতে পাওয়া যায়। যথা- গেরুয়া, সাদা, সবুজ এবং পতাকা ঠিক মধ্যস্থলে সাদা রঙের ভেতরে ঠিক মাঝ বরাবর একটি অশোক চক্র। 24 দন্ড বিশিষ্ট একটি নীল গোলাকার চক্র রয়েছে।
উপরের গেরুয়া রং ত্যাগ, শৌর্য ও সেবার প্রতীক। মধ্যবর্তী সাদা রং হল শান্তি ও পবিত্রতার প্রতীক। এবং তিন নম্বর রং হল সবুজ জীবন র্ধ্ম, নির্ভীকতা ও কর্মশক্তি প্রতীক। সাদা রঙের মধ্যবর্তী স্থানে অশোক চক্র রয়েছে তা হলো উন্নতি ও গতিশীলতার প্রতীক।
জন্ম থেকে মৃত্যু মানুষের যে জীবন চক্র তা এই চক্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। ধর্ম, অনুশাসন ও গতিশীলতার প্রতীকও এই অশোক চক্র।
কিন্তু আপনারা কি কেউ জানেন যে ১৪ই আগস্ট অর্থাৎ স্বাধীনতা দিবস এর আগের দিন ঠিক কি ঘটনা ঘটেছিল? কিভাবে আমাদের দেশ স্বাধীন দেশ বলে ঘোষিত হল? কি ছিল সেই ১৪ ই আগস্ট রাতের রহস্য? এই পোস্টের মূল কথা- স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা।
১৪ই আগস্ট রাতের রহস্য:
আজকের দিন | ভারতের স্বাধীনতা দিবস |
তারিখ | 15 August 2022 |
তাৎপর্য- | ভারতের স্বাধীনতার স্মৃতিকে স্মরণ করে |
ভারত স্বাধীন হয়েছিল | 15 August 1947 |
টাইপ | জাতীয় |
আমরা সবাই জানি, ১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে আমাদের দেশ স্বাধীন হয় এবং লালকেল্লায় স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ভারতকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করেন।
সেই রহস্যই আজ আমরা আপনাদের জানাবো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশদের ক্ষমতা ক্রমশ কমতে থাকে। এর ফলে ভারতে ব্রিটিশ আধিপত্য ক্ষীণ হয়ে আসে। তাই তারা তাদের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন কে ভারত কে স্বাধীন বলে ঘোষণা করার কার্যভার দেন।
সেইমতো লর্ড মাউন্টব্যাটেন ৩ জুন ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করার নির্ণয় নেন। অন্যদিকে এক অধিবেশনে মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ পাকিস্তান নামক স্বরাজের ডাক দেন অর্থাৎ তিনি বলতে চান মুসলমানদের জন্য একটি আলাদা দেশের কথা।
এর ফলে ভারত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় একটি হিন্দুস্তান এবং একটি পাকিস্তান। এই দেশ বিভাজনের ফলে লর্ড মাউন্টব্যাটেন দুই দেশের ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য রাজি হয়ে যান। মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ পাকিস্তান নামক স্বরাজের ডাক দেওয়ার পর থেকে ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।
আগে হিন্দু মুসলমান ভাই ভাই সকলেই ভারত থেকে ব্রিটিশদের তাড়ানোর জন্য তৎপর ছিল। কিন্তু এই দেশ বিভাগের ফলে হিন্দু মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা সৃষ্টি হয় এর ফলে ব্রিটিশরা বুঝতে পারে যে এই ভারতবর্ষে তাদের থাকাটা বা শাসন করাটা আর বেশি দিন সম্ভব নয়।
এই দেশ বিভাজনের ফলে ভারত তার ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৭৩৭ কিলোমিটার অংশ এক রাতেই হারিয়ে ফেলে। তার সাথে ৮ কোটি ১৫ লাখ মানুষও ভারত থেকে চিরদিনের তরে হারিয়ে যায়। ভারতের কাছে এ এক বেদনাদায়ক রাত ছিল। বহু আত্মীয় পরিজন এপার বাংলা- ওপার বাংলার মাঝখানে আটকে পড়ে। একই পরিবার দুটি অংশে ভাগ হয়ে যায় সেই মর্মান্তিক রাতে।
দিনটা ছিল ১৪ই আগস্ট, সারাদিন প্রচুর বৃষ্টিপাত সত্ত্বেও সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল, জহরলাল নেহেরু, ডক্টর রাজেন্দ্র প্রসাদ, মাউন্টব্যাটেন রাত বারোটার আগে ভাইসরয় হাউজে এসে পৌঁছান। রাইসিনা হিলসে পাঁচ লাখ জন মানুষের ভিড় জমায়েত হয়। ঠিক রাত বারোটার সময় জহরলাল নেহেরু তার বক্তব্য রাখেন। জহরলাল নেহেরু বলেন-
“At the stroke of midnight when the world sleeps, India will awake to life and freedom“
–Jawaharlal Nehru
আপনাদের অনেকের মনে এবার প্রশ্ন হতে পারে যে ঠিক রাত বারোটার সময় কেন জহরলাল নেহেরু তার কার্যকলাপ শুরু করেন। এবং 15 ই আগস্ট দিনটিকেই কেন তারা চয়ন করেন?
শুধুমাত্র ভারতীয়রাই যে আধ্যাত্মিক বিষয়ে বিশ্বাসী ছিলেন এই নয়, লর্ড মাউন্টব্যাটেন আধ্যাত্মিক বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্বাসী ছিলেন। ১৫ই আগস্ট ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে জাপান শরণাগতি স্বীকার করেছিল। তাই লর্ড মাউন্টব্যাটেনের এটা ধারণা যে ১৫ ই আগস্ট দিনটি মিত্র শক্তির জন্য ভালো দিন তাই তারা ১৫ই আগস্ট দিনটিকেই বেছে নিয়েছিলেন।
এবং ভারতীয় জ্যোতিষীদের মতে রাত বারোটা এমন এক সময় যা স্বতন্ত্র তার জন্য শুভ তাই ঐদিনই জহরলাল নেহেরু কে লর্ড মাউন্টব্যাটেন স্বাধীন ভারতের ক্ষমতা হস্তান্তর করেন এবং লালকেল্লায় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করেন। মূল কথা- স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা।
১৫ ই আগস্ট এর পরই যে সমস্ত ব্রিটিশ এই ভারত ছেড়ে চলে যান তা নয়। ১৬ই আগস্ট কিছু ব্রিটিশ প্রথম যাত্রা শুরু করেন তাদের নিজের দেশের অর্থাৎ ইংল্যান্ডের দিকে ব্রিটিশদের শেষ জাহাজটি ভারত থেকে গিয়েছিল 27 শে আগস্ট।
ভারতীয়রা ব্রিটিশদের চলে যাওয়ার সময় জাঁকজমক পূর্ণভাবে এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে ব্রিটিশদের বিদায় দিয়েছিল। ঠিক যেমনটা মীরজাফর রবার্ট ক্লাইভ কে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ব্রিটিশরা আমাদের ওপর ২০০ বছর ধরে তাদের আধিপত্য বজায় রাখা সত্ত্বেও ভারতীয়রা কখনোই তাদের আত্মীয় আপ্যায়নের ত্রুটি রাখেনি।
বিদায়ের সময় তাদের রাজকীয়ভাবে বিদায় দিয়েছিল ভারতীয়রা। আসলে এটা ভারতীয়দের জন্মগত স্বভাব তাদের কাছে অতিথিরা ভগবানের মত তার সেই অতিথি তাদেরকে ক্ষতি করুক বা ভালো করুক। যাই হোক এই ভাবে আমাদের দেশ স্বাধীন ভারত রূপে আত্মপ্রকাশ করে।
এই স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য আমাদের দেশের বহু ভারতবাসী তাদের প্রাণ ত্যাগ করতেও এতটুকু ভাবেননি। তাদের কাছে মাতৃসহ ছিল এই ভারতবর্ষ। আর তারা ঠিক মায়ের মতই দেশকে পূজা করতেন। তাই তারা কোনমতেই মেনে নিতে পারেননি একটি বাইরের শক্তি এসে তাদের এই মাতৃভূমির উপর অধিকার কায়েম করুক।
২০০ বছর ধরে চলে আসা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অবসানের জন্য তারা উত্তাল হয়ে পড়ে। তারা যেন আত্মহারা তাদের দেশকে নিজের করে নেওয়ার জন্য। কত মা তার সন্তান হারিয়েছেন,কত স্ত্রী তার স্বামীকে হারিয়েছেন এবং কত ছেলে মেয়ে তার বাবা মা আপনজনদের হারিয়েছেন।
কত রক্ত ঝরেছে এই মাতৃভূমির উপর ভারত মাতা যেন একসময় কাতর হয়ে পড়েছে তার এই বীর পুত্রদের শব্দ হয়েও দেখে মানুষ ক্রমিক্রমে উত্তেজিত হয়ে ওঠে তারা চায় নুন ভাত কাপড়ে যেন তাদের নিজের অধিকার থাকে, তাদের মধ্যে যেন নিজস্বতা থাকে।
নিজের মাতৃভূমির উপর অধিকার ফিরে পেতে সংগ্রামের পর সংগ্রাম করে চলেছিল আমাদের বীর সন্তানেরা তারা তাদের সংসার ত্যাগ করে যেন দেশ ভূমির প্রতি নিজেদের সমর্পণ করে দিয়েছে। কিন্তু তাদের সংকল্প ছিল দৃঢ় তাই তারা জীবনের পরোয়া না করে জীবনের শেষ নিঃশ্বাসটুকু ভারত মাতা কে সমর্পণ করে দিয়ে গেছেন।
আজ শুধু স্বাধীনতা দিবস না আজ এমন এক দিবস যা আমাদের ভারতের বীর পুত্রদের সেই ত্যাগকে স্মরণ করায় কত দুঃখ কাতর মায়েদের কান্না কে স্মরণ করায়। সেই সব সংগ্রাম গুলিকে যার জন্য আজ আমরা স্বাধীন।
হয়তো তারা ছিল বলেই আজ আমরা স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছি। তাদের সংগ্রাম, তাদের জীবন দান এসবই আমাদের জন্য। তারা এত কষ্ট করেও হয়তো স্বাধীনতা উপলব্ধি করতে পারেনি। তারা দেখতে পারেনি দেশ স্বাধীন হয়েছে তাদের রক্ত মাখানো বেদিতে মা দেশ মা স্বাধীন পতাকায় উত্তোলিত হয়েছে।
তবে আমরা স্বাধীন ভারতীয় তাদের মত সংগ্রাম হয়তো আমরা করতে পারিনি। আমাদের এই দিনে সেইসব সংগ্রামীদের স্মরণ করা উচিত যাদের কারনে আজ আমরা স্বাধীনভাবে চলতে পারছি।
তারা বহিরাগত হয়েও ভারতে তাদের অধিকার বজায় রেখেছিল ২শত বছর ধরে, এই ২০০ বছর ধরে ভগৎ সিং, বিনয় বাদল দিনেস এর মত কত বীর পুত্র চেষ্টা করেছে তাদের এই মাতৃভূমিকে ব্রিটিশদের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য।
কিন্তু ব্রিটিশদের কাছে তারা বারবারই হার মেনেছে ঠিকই কিন্তু তাদের মনোবল এতটুকুও কমেনি। তারা কখনো স্বার্থের বিনিময়ে যুদ্ধ করেনি তারা সকলের স্বার্থের জন্য তাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে ব্রিটিশদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য কত সংগ্রাম করেছেন, তাদের সাথে হয়েছে অন্যায়, অবিচার, নিজ ভূমিতে থাকা সত্ত্বেও তারা নিজে ভূমির ফসল আবহাওয়া এবং সম্পদকে ব্যবহার করতে পারেনি।
তারা নিজের দেশেই যেন দাস হয়ে খেটে গেছে ২০০ বছর ধরে। আজ স্বাধীনতা দিবসে আমরা আরও কিছু মানুষদের স্মরণ করব যারা হয়তো প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার জন্য লড়াই না করলেও পরোক্ষভাবে তাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম চালিয়ে গিয়েছিলেন।
দেশে দেশের তরুণ তরুণীদের মনে যারা কবিতার মাধ্যমে দেশপ্রেম ও জাতীয়তা বোধের সঞ্চয় ঘটিয়ে ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জহরলাল নেহেরু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্র প্রমূখ।
কাজী নজরুল ইসলাম এর লেখা কবিতা দেশবাসীর মনে প্রবল ভাবে দেশপ্রেম ও দেশ সব ভক্তি জাগিয়ে তুলেছেন যার ফলে তার কবিতা পড়ে দেশবাসী তাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য আরো বেশি তৎপর হয়ে ওঠে। তার লেখা একটি কবিতা হল-
কারার ঐ লৌহকপাট,ভেঙ্গে ফেল, কর রে লোপাট,
রক্ত-জমাটশিকল পূজার পাষাণ-বেদী।ওরে ও তরুণ ঈশান!
-কাজী নজরুল ইসলাম
স্বাধীন ভারতের রাষ্ট্রীয় সংগীত “বন্দেমাতারাম” লিখেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র। তার এই বান্দে মাতারাম ধ্বনি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের না হয়ে উঠেছিল শুধু তাই নয় আজও তার এই গান আমাদের সেই সব স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কথা স্মরণ করায় এবং আজও আমাদের মধ্যে দেশপ্রেম জাতীয়তাবোধ জাগিয়ে তোলে।
স্বাধীন ভারতের গাওয়া প্রথম জাতীয় সংগীত ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা “জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে” আজও আমরা প্রতি বিদ্যালয়ে, অফিসে, আদালতে এবং বিভিন্ন রকম কর্মক্ষেত্রে সরকারি কর্মক্ষেত্রে এই সংগীত গেয়ে থাকি। এই গানের প্রত্যেকটি ছত্রে প্রত্যেকটি শব্দে আমাদের ভারত মাতার বিবরণ রয়েছে। আমাদের দেশের বিন্ধ পর্বত থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত যে সৌন্দর্য তার বর্ণনা রয়েছে।এই পোস্টের মূল কথা- স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা।
কেন ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ ই আগস্ট কেই স্বাধীনতা দিবস মনোনীত করা হলো
গভর্নর জেনারেল মাউন্টব্যাটেন পার্লামেন্ট ক্ষমতা হস্তান্তরের যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তাতে বলা হয়েছিল ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ৩রা জুনের মধ্যেই ভারত ও পাকিস্তান কে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
কিন্তু তাদের শক্তি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ায় তারা ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে আগস্ট মাসেই ভারত ও পাকিস্তান কে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশরা বুঝতে পারে যে তারা এই ভারতবর্ষে রাজত্ব করতে পারবে না।
পাশাপাশি যেভাবে ভারতীয়রা সংগ্রাম করে চলেছে তাদের আক্রমণ কে প্রতিহত করার জন্য তাদের কাছে যথেষ্ট সৈনিক বা অর্থ সম্পদ ছিল না। তাই ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ৩রা জুনের আগেই ভারতকে 1947 খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে ক্ষমতা হস্তান্তর করার সিধান্ত নেয় ব্রিটিশ সরকার।
তবে লর্ড মাউন্টব্যাটেনের নির্দেশ অনুযায়ী ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস একই দিনেই পালিত হবে এমনটাই বলা হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেছে পাকিস্তান তাদের স্বাধীনতা দিবস পালন করে ১৪ই আগস্ট ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে। অপরদিকে ভারত তাদের স্বাধীনতা দিবস পালন করে ১৫ ই আগস্ট ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে।
তবে সূত্র থেকে জানা গেছে ভারত কিন্তু একদিনেই স্বাধীন হয়নি। স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে পূর্ণ স্বরাজের দাবি করেন।
জহরলাল নেহেরুর পূর্ণ স্বরাজের দাবিতে কংগ্রেস দলের সদস্যরা ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ শে জানুয়ারি এই দিনটিতে তাদের স্বাধীনতা দিবস পালন করতে থাকে। যতদিন না ব্রিটিশরা সম্পূর্ণরূপে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে ততদিন পর্যন্ত তারা এই ২৬ শে জানুয়ারি দিনটিতেই তাদের স্বাধীনতা দিবস পালন করতো।
অবশেষে লর্ড মাউন্টব্যাটেন পার্লামেন্ট ক্ষমতা হস্তান্তরের ফলে 1947 খ্রিস্টাব্দে ১৫ আগস্ট ভারতীয়রা তাদের স্বাধীনতা দিবস পালন করে। দিল্লির লালকেল্লায় স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু স্বাধীন ভারতের প্রথম পতাকা উত্তোলন করে স্বাধীনতা দিবসের সূচনা করেন।
এরপর থেকে প্রত্যেক বছর ১৫ই আগস্ট এই দিনটিতেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী দিল্লির লাল কেল্লায় পতাকা উত্তোলন করেন এবং বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও বিভিন্ন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ভাষণ কুচকাওয়াজ এবং দেশাত্মবোধক সংগীত, যেমন- জনগণমন ও বন্দেমাতারাম গেয়ে দিনটিকে পালন করে থাকেন। এই পোস্টের মূল কথা- স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা।
উপসংহার:
মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল, ভগত সিং বিনয়, বাদল, দীনেশ এরকম বহু সংগ্রামী তাদের সংগ্রাম এর দ্বারা আমাদের দেশকে স্বাধীন করতে তাদের সমস্তটা অর্পণ করেছিল। মহাত্মা গান্ধীর মতে করব নয় মরবো।
অর্থাৎ হয় দেশ স্বাধীন করব না হয় দেশ স্বাধীন করার জন্য নিজের জীবনের আহুতি দেব। নেতাজি সুভাষচন্দ্রের আহ্বান ছিল-
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু
অর্থাৎ নেতাজি আজাদ হিন্দ ফৌজ এর ভারতীয় তরুণ তরুণীদের যোগদানের জন্য প্রেরণা জুগিয়েছিল।
কারণ যুদ্ধে প্রাণ হারানোর ভয়ে যদি আমরা পিছিয়ে আসি তাহলে আমরা কোনদিনও স্বাধীনতা অর্জন করতে পারবোনা। বিনয়-বাদল-দীনেশ ব্রিটিশদের হাতে মৃত্যুবরণ করার থেকে নিজেরাই নিজেদেরকে শেষ করে দিয়েছিল।
এরকম বহু সংগ্রামী ছিল যারা হাসতে হাসতে মৃত্যুকে আহ্বান জানিয়েছিল। ক্ষুদিরাম বসু মাত্র ১১ বছর বয়সে ফাঁসির দড়িতে নিজের জীবন আহুতি দেন। তিনি তার ফাঁসির ঠিক মুহূর্তে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন যে তিনি হাসতে হাসতে দেশ মায়ের জন্য ফাঁসি পড়বেন এবং তা সকল ভারতবাসী দেখবেন।
আজ তাদের এই বলিদান এর কারণে আজ আমরা স্বাধীন। এই স্বাধীনতা দিবসে তাদের কোটি কোটি প্রণাম। এবং এই স্বাধীনতা দিবসে আমাদের আরো কিছু মানুষ আছে যাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। সেটা হল আমাদের ভারতের বর্ডারে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীতে পাহারা দেওয়া সেই সব সৈনিকদের যাদের জন্য আজ আমরা এখানে স্বাধীনতা দিবস পালন করতে পারছি।
তারা সর্বদা আমাদের এই ভারতবর্ষকে বাঁচিয়ে চলেছে যাতে আর কোন বিদেশীরা ভারতকে আক্রমণ করতে না পারে। তাই স্বাধীনতা দিবসের একটি শেষ স্লোগান ‘জয় হিন্দ’ রইল আমাদের ভারতীয় ভাই বোনদের প্রতি আর দেশের জওয়ান ও শহীদদের প্রতি। দেশ ভক্তি, দেশ প্রেম এবং জাতীয়তাবোধই হোক সমস্ত ভারতীয়দের একমাত্র অনুপ্রেরণা।
আশা রাখি আমাদের আলোচ্য পোস্টটি- স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা বিশয়টির আপনাদের কে সঠিক ভাবে তুলে ধরতে পেরেছি। আমদের এই পোস্টি ভালো লাগলে আপনাদের বন্ধু ও পরিবার এর সথে শেয়ার করবেন।
অন্যান্য পোস্ট গুলি-
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বক্তব্য | Computer full form in bengali |
DNA Full form in Bengali | Nasa full form in bengali |
ভারত কত সালে স্বাধীন হয়?
1948 সালে 15 August ভারত স্বাধীন হয়।
স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু।
স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি কে ছিলেন
স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি কে ছিলেন ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ।
I’m Sourav, (BA) Graduate. Specialized content writer. Get accurate information from Moneygita.