সিভি ফুল ফর্ম | CV Full form in Bengali

সিভির ফুল ফর্ম কি অথবা CV full form in Bengali। তাই এই Article – এর মাধ্যমে আমরা আপনাদের সুবিধার্থে CV সম্বন্ধীয় সকল তথ্য বিস্তারিত ভাবে ব্যাখ্যা করতে চলেছি।

কারণ, একটি সংস্থাতে অনেক CV জমা পড়ে আর সংস্থাগুলির এত সময় থাকে না যে, আপনার CV টি ধৈর্য ধরে পড়বে।

CV Full form in Bengali

CV কথার পূর্ণরূপ হল Curriculum Vitae (কারিকুলাম ভাইটা)। CV একটি ল্যাটিন শব্দ যার ইংরেজি নাম course of (one’s) life। বাংলায় যাকে বলা হয় জীবনবৃত্তান্ত। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে নিজ সম্বন্ধীয় সমস্ত প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিবরণ আমরা CV তে তুলে ধরি। 

সিভি ফুল ফর্ম কি

সিভি ফুল ফর্ম কারিকুলাম ভিটে। যার বাংলা অর্থ হলো জীবন বৃত্তান্ত। আপনার সিভি আপনি নিজে থেকে বানাতে চেষ্টা করুন। অন্য কারও সিভি নকল করে নিজের সিভি তৈরি করবেন না। নিজস্ব computer, Laptop অথবা Smartphone এর সাহায্যে কিংবা Cyber Cafe তে গিয়ে এটি বানাতে পারেন।

CV কী?

আমরা চাকুরী প্রার্থীরা কোন কোম্পানিতে বা অফিসে কাজের উদ্দেশ্যে অথবা Internship, Fellowship, স্কুল- কলেজের Faculty, Part time teacher ইত্যাদি বিভিন্ন academic পদে আবেদনের জন্য সর্বত্র যে আবেদন পত্র ব্যবহার করে থাকি তাকে CV বলে। 

ভালো CV লেখার নিয়ম-

ভালো CV লেখার নিয়ম গুলি হলো:

  1.  CV-র ভাষা সহজ প্রয়োগ করুন। আর বানান ও ব্যকরনগত ভুল ত্রুটি যেন না থাকে সেদিকে দৃষ্টি দিন। অহেতুক কঠিন শব্দ বা জটিল ভাষা ব্যবহার করে বিষয়টিকে জটিল না করায় ভালো। 
  2. ১ থেকে ২ Page এর মধ্যে CV বানানোর চেষ্টা করুন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত অপ্রাসঙ্গিক কোনা কিছু লিখে এটিকে বড় করার কোনো প্রয়োজন নেই। এটি আপনার Interviewer এর ওপর ভালো প্রভাব ফেলতে সহায়তা করবে। 
  3. যে চাকুরীর জন্য আবেদন করছেন সেই সম্বন্ধীয় দক্ষতা বা শিক্ষাগত যোগ্যতার ওপর জোর দিয়ে CV টি বানালে ভালো হয়।
  4. CV সর্বদা চাকুরীর ক্ষেত্র অনুযায়ী To the Point হিসাবে তৈরী করুন যাতে নিয়োগকারীর আপনার প্রতি আগ্রহ বাড়ে।
  5. একই CV সর্বএ ব্যবহার করা উচিত নয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী CV টি Update করলে ভালো হয়।
  6. আপনি সাম্প্রতিক কোন ধরনের কাজ করেছেন, আগে সেইসব কথা উল্লেখ করুন কিংবা কোনো achievement/award পেলে তা বিশেষভাবে উল্লেখ করুন।

সিভি লেখার ফরমেট

  • ১ থেকে ২ পাতার মধ্যে CV বানানোর চেষ্টা করুন। 
  • A4 সাইজের পাতা ব্যবহার করুন। 
  • Letter গুলির সাইজ ১২/১৪-এর মধ্যে রাখুন। 
  • লেখার মধ্যে Space রাখার চেষ্টা করুন দেখতে যাতে পরিষ্কার লাগে।
  • CV format Page টিতে উপযুক্ত, ডিজাইন প্যাটার্ন ব্যবহার করুন যাতে Interviewer এর কাছে তা দৃষ্টিকটু না লাগে। 
  • MS word a type করলে Arial, calibri, Times New Roman এসব ফন্টে লিখলে সেটা ভালো দেখতে হয়।
  • পড়ার সুবিধার জন্য পয়েন্ট করে লিখুন অথবা বুলেট চিহ্ন দিন। 
  • সহজ ভাষা প্রয়োগ করুন। Spelling ও Grammatical mistake যাতে না থাকে সেদিকে দৃষ্টি দিন। 
  • সিভির সাথে আপনার নতুন পাসপোর্ট সাইজ ফটো চিটিয়ে দিন।

সিভির অংশগুলি

সিভিতে নিম্নলিখিত অংশগুলি থাকে:

  • যোগাযোগ সম্বন্ধীয় তথ্য: শুরুতেই পুরো নাম লিখতে হবে। কোনো ডাকনাম ব্যবহার করবেন না। আর নামের আগে Mr বা Miss ব্যবহার করবেন না। আপনার সাথে যাতে তারা যোগাযোগ করতে পারে তার জন্য আপনি আপনার Phone number ও Email ID টি দেবেন। 
  • পেশাগত দক্ষতা: সবার আগে লিখুন এখন আপনি কোনো কাজের সাথে যুক্ত আছেন কিনা সেই বিষয়ে। কিংবা এর আগে কোনো কাজ যদি করে থাকেন তা লিখুন। যে সংস্থায় চাকরির জন্য আবেদন করেছেন সেই কাজের সাথে যুক্ত কোনোরূপ কার্যের অভিজ্ঞতা থাকলে তা উল্লেখ করুন।
  • পেশাগত লক্ষ্য: আপনি কোন ধরনের ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী তা জানান ও তার সাথে বর্তমান চাকরি কিভাবে সম্পর্কযুক্ত তা সংক্ষেপে লিখুন।
  • সফলতা: কোনোরকম ভালো কাজের জন্য পুরস্কার ও সম্মান জনক Award পেলে তা উল্লেখ করুন।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা: যদি মাস্টার ডিগ্রী করেন তো সেটা আগে লিখুন। কোন University থেকে আর কত পারসেন্টেজ পেয়েছেন তা বলতে হবে, তারপর উচ্চ বিদ্যালয়ের রেজাল্ট লিখুন। এভাবে সাম্প্রতিক ডিগ্রী থেকে পূর্ববর্তী শিক্ষা বিষয়ক তথ্যগুলো লিখতে হবে। Computer-এর knowledge থাকলে তা অবশ্যই উল্লেখ করুন। 
  • পছন্দ: আপনি কি কি পছন্দ করেন, কোন বিষয়ে আগ্রহী এইসব সংক্ষেপে ব্যক্ত করুন।
  • ব্যক্তিগত তথ্য: এখানে আপনার নাম, পিতার নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, লিঙ্গ, ধর্ম, ভাষা, জাতীয়তা, বিবাহিত না অবিবাহিত এসব বিষয় উল্লেখ করতে হবে। চাকরিদাতা আপনার দেওয়া সমস্ত তথ্য যাচাই করে দেখতে পারেন তাই কোনো ভুল তথ্য দেবেন না।
  • তারিখ ও স্বাক্ষর: সবশেষে নিচে নিজের signature করে তারিখ বসিয়ে দিন।

CV এবং Resume পার্থক্য

আমরা প্রত্যেকেই CV এবং Resume এই কথা দুটি একই অর্থে ব্যবহার করে থাকি। কারণ, CV ও Resume এই দুটি জিনিসেরই ব্যবহার হয় মূলত কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে। একজন চাকরি প্রার্থী CV এবং Resume উভয়ের মাধ্যমেই ব্যক্তিগত সমস্ত তথ্য উপস্থাপন করে নিয়োগের আবেদন করতে পারেন।

উভয়ই একই উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হলেও গঠন, কাঠামো ও অন্যান্য আরও কিছু বিষয়ে এদের মধ্যে তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। যেমন –

  1. CV ২ থেকে ৩ পাতা বা তারও বেশি পাতার একটি Document হতে পারে। কারণ এখানে প্রার্থীর  ব্যক্তিগত পরিচয়, পেশাগত দক্ষতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পূববর্তী কর্ম অভিজ্ঞতা সম্বন্ধীয় বিবরণ, Award, সাফল্য, দরকারী কোনো গবেষণা, বিশেষ যোগ্যতা, এছাড়াও কিছু ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নিজের পছন্দ- অপছন্দ, শখ, আগ্রহ নেতৃত্বদানের ক্ষমতা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় যোগ করা যেতে পারে। যেকারনে CV-এর পৃষ্ঠা সংখ্যা অনির্দিষ্ট। 
  2. এদিকে Resume মূলত ১ বা ২ পৃষ্ঠার হয়। কারণ আবেদনকারী ব্যক্তির সকল ব্যক্তিগত তথ্য এখানে উল্লেখ করার প্রয়োজন হয় না। পেশাগত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে গুরুত্ব দিয়ে চাকুরী অনুযায়ী নির্দিষ্ট দক্ষতা ও যোগ্যতাকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়। মূলত আবেদনকারীর education, Skill আর Employment-এর ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয় Resume এ।
  3. CV তে সকল প্রকার Certifications উল্লেখ করা হয়। কিন্তু Resume – এ কেবলমাত্র চাকুরির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক এবং সক্রিয় certifications কে উল্লেখ করা হয়।
  4. চাকুরির প্রয়োজন অনুযায়ী CV কে পরিবর্তন করার দরকার হয় না। কিন্তু Resume নির্দিষ্ট চাকুরীর জন্য প্রার্থীর যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী তৈরী করা হয়। তাই চাকুরীর প্রয়োজন অনুযায়ী এটিকে পরিবর্তন করতে হয়।
  5. শুধুমাত্র চাকুরীর ক্ষেত্রে নয়, চাকুরীর পাশাপাশি academic ক্ষেত্রেও সাধারণত Faculty নিয়োগ, Internship, Fellowship ইত্যাদির জন্যেও CV ব্যবহৃত হয়। নেই
  6. আর Resume সাধারণত ব্যবসায়িক শিল্প, সরকারী এবং অলাভজনক কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়।

CV Rejected হওয়ার কারণ –

  1. অহেতুক অতিরিক্ত অপ্রসাঙ্গিক তথ্য দিয়ে CV বড় করলে তা নিয়োগকর্তাদের কাছে বিরক্তির কারণ হয়।
  2. CV তে To The Point এর অভাব থাকলে।
  3. উপযুক্ত ডিজাইন প্যাটার্ন বা টেম্পলেট ব্যবহার না করলে।
  4. সফলতার বিষয়গুলিকে প্রাধান্য না দিলে। 
  5. জটিল ভাষা প্রয়োগ করলে।
  6. বানান ভুল ও ব্যাকরণ জনিত ত্রুটি থাকলে। 
  7. যোগাযোগ সংক্রান্ত তথ্যকে স্পষ্ট ও পরিষ্কার না রাখলে।
  8. CV টিকে উপযুক্ত,তথ্য দিয়ে আকর্ষনীয় করে না তুললে।

CV তৈরী করা খুবই সহজ এবং এটি তৈরী করার সময় আপনাকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যত্ন নিতে হবে যাতে নিয়োগকারী ব্যক্তিটি আপনার CV বুঝতে পারেন এবং সেটি যেন তার কাছে আকর্ষনীয় হয়। 

CV টি এমনভাবেই তৈরী করতে হবে যাতে নিয়োগকারী আপনাকে একজন দায়িত্ববান ও ভরসাযোগ্য ব্যক্তি মনে করেন এবং আপনাকে কাজে নিযুক্ত করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। চাকরির প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো ভালো CV তৈরী করা যা আপনার সম্পর্কে নিয়োগকারীদের কাছে একটি ভালো ধারণা দেয়।

এক কথায় বলা যায় নিয়োগকারীদের কাছে নিজেকে কাজের যোগ্য প্রমাণ করার কৌশল হল একটি ভালো CV। কিন্তু আমরা সেটির উপর তেমন গুরুত্ব দিনা। 

CV তে কোন কোন তথ্য দেওয়া হয় এবং কিভাবে সেগুলো সাজানো উচিত তা অনেক মানুষই ঠিকমত জানেন না। অনেকেই একটি ভুল করে থাকেন তা হলো cyber cafe বা কোনো online centre এ গিয়ে তাদের computer এ আগে থেকে তৈরী করে রাখা গতানুগতিক format এ CV তৈরী করেন যেগুলির গুনগত মান অনেক সময় সঠিক হয় না। 

তাই এগুলো ব্যবহার না করে একটি সুসজ্জিত ও মার্জিত CV format বাছাই করে CV প্রস্তুত করা আবশ্যক। 

সবশেষে মনে রাখতে হবে আর একটি বিষয়, সেটি হল আপনি আপনার CV তে কি কি তথ্য দিযেছেন তা A to z মাথায় রাখবেন। কারণ Interviewer সেইসব তথ্য থেকেও আপনাকে নানান প্রশ্ন করতে পারেন। তাই সে বিষয়ে সদা সর্তক থাকবেন।

অনেকেই একটি ভুল করেন তা হল Cyber Cafe বা কোনো online centre -এ গিয়ে সেখানে তাদের computer – এ আগে থেকে তৈরী করে রাখা format -এ Cv তৈরি করে নেন। সেগুলির গুণগত মান অনেক সময় ঠিক থাকে না। 

তাই সেগুলিকে ব্যবহার না করাই ভালো। অন্য কাউকে দিয়ে না করিয়ে Internet থেকে একটি সুসজ্জিত CV Format বাছাই করে নিজের CV নিজে প্রস্তুত করাই শ্রেয়।

Next: DNA Full form in Bengali

Leave a Comment