ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল (National Scholarship Portal in Bengali) হল এমন একটি স্কলার্শিপ প্লাটফর্ম যা কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য এবং UGC (University Grants Commission of India) এর মতো বিভিন্ন সংস্থা দ্বারা পরিচালিত। এই পোর্টালটি রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় একাধিক স্কলার্শিপ গুলির বৃত্তি বহন করে। ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল প্লাটফর্মে প্রায় 100 চারটি স্কলারশিপ স্কিম পোস্ট করা হয় এবং এই প্লাটফর্মে নিবন্ধিত প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রায় শত কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়ে থাকে বেশকিছু কর্মকর্তাদের মতে ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল (National Scholarship Portal in Bengali) প্লাটফরমটি এ পর্যন্ত সরকারকে ২৭০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্য বৃদ্ধি বিতরণ করেছে এবং ১২৭ লাখেরও বেশি অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে যার মধ্যে ৮৪ লাখেরও বেশি অ্যাপ্লিকেশন যাচাই করা হয়েছে ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল প্ল্যাটফর্মটিতে।
আসুন তাহলে জেনে নিন ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল কি?
Table of Contents
National Scholarship Portal in Bengali Highlight 2023
পোর্টাল এর নাম | ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল |
শুরু করেছেন | কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা |
মন্ত্রণালয় | Ministry of Electronics and Information Technology, Government of India |
সুবিধা টি পাবেন | সমস্ত ভারতের ছাত্র |
উদেশ্য | ছাত্রদের স্কলারশিপ প্রদান করা |
আবেদন প্রক্রিয়া | অনলাইন |
অফিশিয়াল ওয়েবসাইট | https://scholarships.gov.in/ |
ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল কি? What is National Scholarship Portal in Bengali
ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল হলো একটি ডিজিটাল স্কলার্শিপ মাধ্যম। এই প্ল্যাটফর্মটি সম্পূর্ণ অনলাইন মোডে স্কলারশিপের জন্য আবেদন গ্রহণ করে এবং শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করে। National e-Governance Plan (NEGP) এর অধীনে প্রজেক্ট স্কলারশিপ হিসেবে প্রবর্তিত সবচেয়ে বিশিষ্ট স্কলারশিপ পোর্টাল গুলোর মধ্যে অন্যতম।
ছাত্রবৃত্তির আবেদন থেকে শুরু করে তাদের বৃত্তি বিতরণ পর্যন্ত একাধিক পরিষেবা প্রদান করে, একইসঙ্গে বৃত্তিটি কার্যকর এবং দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য একটি ডিজিট্যাল অনলাইন সিস্টেম অফার করে থাকে। এই সিস্টেমটি সরলীকৃত, মিশনভিত্তিক, জবাবদিহিমূলক, প্রতিক্রিয়াশীল এবং স্বচ্ছ। এই ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টালে শিক্ষার্থীদের একাউন্টে সরাসরি বৃত্তির টাকা সরবরাহ করা হয় যার ফলে টাকা মাঝপথে ফাঁস হওয়ার কোনরকম সম্ভাবনা থাকেনা। এটি সম্পূর্ণ একটি নিরাপদ পোর্টাল।
এবার আসি পরবর্তী আলোচ্য বিষয়ে ,
National Scholarship Portal কেন তৈরি হয়?
ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল প্ল্যাটফর্ম গঠন করার পিছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে ,আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন ছাত্রদের পড়াশোনার জন্য। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় স্তর দ্বারা পরিচালিত হয় বিভিন্ন স্কলারশিপ রাজ্য সরকার সেগুলি যাতে সঠিক উপায়ে এবং সুরক্ষিত ভাবে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছায় তার জন্য ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল টি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে।
নিম্নলিখিত কারণে ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল গঠন করা হয়:
- সময়মতো পড়ুয়াদের কাছে বৃত্তি বিতরিত হচ্ছে কিনা তার নিশ্চিতকরণ করা।
- একটি সাধারণ প্লাটফর্ম তৈরি করা কেন্দ্র এবং রাজ্য স্তরের স্কলার্শিপ গুলির জন্য।
- মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের একটি স্বচ্ছ ডাটাবেস তৈরি করা।
- অ্যাপ্লিকেশন প্রক্রিয়াকরণের সময় বিভিন্ন রকম সদৃশতা এবং বৃত্তির বিভিন্নতা ও তাদের নিয়মের সাথে সামঞ্জস্য রক্ষা করা।
এবার আমরা জেনে নিয় ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টালটির দ্বারা কিভাবে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে?
ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টালটির দ্বারা কিভাবে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে
ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল টি একটি বিশ্বাসযোগ্য এবং সুরক্ষিত পোর্টাল। এই পোর্টালটির দ্বারা কিভাবে পড়ুয়ারা উপকৃত হবে সেই সম্পর্কে নিচে জানানো হলো।
- প্রথমেই এনএসপি স্কলারশিপ এর জন্য পড়ুয়াকে নিজস্ব যোগ্যতা পরীক্ষা করতে হবে।
- ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টালে যোগ্য ছাত্র ছাত্রীরা আবেদন নিবন্ধন করবে এবং তারা যে স্কলারশিপের জন্য যোগ্য তার জন্য আবেদন করবেন।
- আবেদনটি সম্পূর্ণ অনলাইনে হবে।
- স্কলার্শিপ কর্তৃপক্ষ অনলাইন আবেদনটি যাচাই এবং বাছাই করবেন এবং এই সমস্ত প্রক্রিয়াকরণ আপনি পোর্টালের মাধ্যমে নিজস্ব আবেদনটির অবস্থান ট্র্যাক করতে পারবেন।
- আবেদনটি সফলভাবে যাচাই করা হলে পড়ুয়াদের মেধার ভিত্তিতে ধার্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সরাসরি বেনিফিট ট্রান্সফারের মাধ্যমে পড়ুয়ার একাউন্টে জমা করা হবে।
সর্বপ্রথম National Scholarship portal এর জন্য পরিবারকে নিজস্ব যোগ্যতা পরীক্ষা করতে হবে, এরপর ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল এ নিজের আবেদনটি নিবন্ধন করতে হবে এবং পড়ুয়া স্কলারশিপের জন্য যোগ্যতার ভিত্তিতে আবেদন করবে। এই আবেদনটি সম্পূর্ণ অনলাইন অর্থাৎ ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় প্রক্রিয়াকরণ ঘটে। এরপর স্কলারশিপ কর্তৃপক্ষ অনলাইন আবেদনটি যাচাই এবং বাছাই করবেন এবং সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া পোর্টালের মাধ্যমে আবেদনের অবস্থা ট্র্যাক করতে পারবে পড়ুয়া। নিবন্ধিত ছাত্র ছাত্রীদের মেধার ভিত্তিতে ধার্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সরাসরি ট্রান্সফারের মাধ্যমে একাউন্টে জমা হবে।
এরপর আমরা জানবো ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল কি কি স্কলারশিপ কে কভার করে থাকে?
ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল কি কি স্কলারশিপ কে কভার করে থাকে?
ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল এ প্রথম থেকে পিএইচডি স্তরে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য একাধিক বৃত্তি বা স্কলারশিপ কভার করে থাকে।
National Scholarship Portal নিম্নলিখিত বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ গুলিকে কভার করে থাকে, নিচে এই সমস্ত বিভাগগুলি শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে।
- কেন্দ্রীয় স্কিম
- UGC( ইউনিভার্সিটি গ্রান্ট কমিশন ) স্কিম।
- রাষ্ট্রীয় স্কিম।
- AICTE স্কিম
কেন্দ্রীয় স্কিম
ভারত সরকার দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন বিভাগ কোনো আর্থিক সীমাবদ্ধতা ছাড়াই শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য তাদের স্বপ্নের একাডেমিক ক্যারিয়ার যাতে অনুসরণ করতে পারে সেই জন্য সাহায্য করে। বৃত্তি প্রদানকারী বিভাগ গুলোর মধ্যে রয়েছে-
- সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয়(MOMA)
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন বিভাগ (DEPwD)
- সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রণালয় (MSJE)
- শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় (MLE)
- মন্ত্রণালয় ট্রাইবাল অ্যাফেয়ার্স (MTA)
- ডিপার্টমেন্ট অফ হায়ার এডুকেশন (DHE) ইত্যাদি।
এবার আমরা কোন কোন বিভাগ গুলি কোন কোন স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে সে ব্যাপারে আলোচনা করব।
সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাক ম্যাট্রিক, পোস্ট ম্যাট্রিক এবং মেরিটকাম মেন্স স্কলার্শিপ নিয়ন্ত্রিত হয়। সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিভাগ থেকে, প্রতিবন্ধী ছাত্র ছাত্রীদের প্রাক ম্যাট্রিক ও পোস্ট ম্যাট্রিক এবং উচ্চ শিক্ষার জন্য আর্থিক সহায়তা করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন বিভাগ। এস সি (SC), এসটি(ST), ওবিসি(OBC) পড়ুয়াদের শিক্ষাবৃত্তি বহন করে সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রণালয় I OMC, LSDM র জন্য আর্থিক সহায়তা উদ্দেশ্যে প্রাক-ম্যাট্রিক, পোস্ট- ম্যাট্রিক শিক্ষাবৃত্তি বহন করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং স্কুল,কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি বহন করে ডিপার্টমেন্ট অফ হায়ার এডুকেশন।
UGC( ইউনিভার্সিটি গ্রান্ড কমিশন) :
ইউনিভার্সিটি গ্রান্ট কমিশন হল ভারতীয় সরকারের একটি বিশিষ্ট সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা MHRD( মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়)।
এই সংস্থা ভারতের উচ্চ শিক্ষার মান ও সমন্বয় নির্ধারণ এবং বজায় রাখার লক্ষ্যে স্থাপিত করা হয়েছে। এই সংস্থা ভারতজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে স্বীকৃতি দেয় এবং পড়ুয়াদের জন্য বৃত্তি প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলি তেল সরবরাহ করে এটি ছাড়াও UGC কলেজ স্তরের শিক্ষা গ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু অতিরিক্ত বৃত্তি প্রদান করে। উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের জন্য “ইশান-উদয়” একটি বিশেষ বৃত্তি প্রকল্প , এক মেয়ে শিশুর জন্য “ইন্দিরা গান্ধী” বৃত্তি, ইউনিভার্সিটি প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থানাধিকারী দের জন্য “পিজি স্কলার্শিপ”। এছাড়াও প্রফেশনাল কোর্স করার জন্য SC, ST ছাত্র ছাত্রীদের জন্য “পিজি স্কলারশিপ স্কিম” আয়োজন করে এই বিশেষ সংস্থা।
রাজ্যে স্কিম:
কেন্দ্র সরকারের পাশাপাশি রাজ্য সরকার সংশ্লিষ্ট রাজ্যের আবাসিক পড়ুয়াদের জন্য বৃত্তি ব্যবস্থা আয়োজন করে থাকে। তবে বেশ কিছু রাজ্য সরকার তাদের বৃত্তি আবেদনের জন্য নিজস্ব পোর্টালের স্থাপন করে থাকে তবে বেশ কিছু রাজ্য তাদের বৃত্তি বা স্কলারশিপ আবেদনের জন্য ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল এর উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে বিহার, উত্তরাখণ্ড, ত্রিপুরা, কর্ণাটক ,অরুণাচল প্রদেশ এর মত ছয়টি ভিন্ন রাজ্যের রাজ্য প্রকল্পগুলিকে ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল নিয়ন্ত্রণ করছে।
AICTE স্কিম:
National Scholarship Portal কারিগরি শিক্ষার জন্য বিশেষ বৃত্তি প্রদান করে থাকে AICTE স্কিম দ্বারা। এই বিভাগ কারিগরি শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত পড়ুয়াদের বৃত্তি বহন করে। All India Council for Technical Education (AICTE) ১৯৪৫ সাল থেকে পরিচালিত এমন একটি বিভাগ যা ভারতে প্রযুক্তিগত ও ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি উভয়ের জন্য সমন্বিত উন্নয়ন এবং সঠিক পরিকল্পনা করে থাকে।
নির্দিষ্ট বিভাগের অন্তর্গত স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম গুলি দ্বারা অনুমোদিত বিভিন্ন বৃত্তি সত্বেও AICTE টেকনিক্যাল বা কারিগরি শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কিছু বৃত্তি প্রদান করে যা তাদের কারিগরি শিক্ষা কে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। এই স্কিমের প্রধান উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের পেশাগত কর্মজীবনে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে ভেঙে না পড়ে এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যেতে পারে।
ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল প্রয়োজনিয় নথি
এবার আমরা জেনে নিই ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল (NSP) এ আবেদন করার জন্য কি কি নথি প্রয়োজন রয়েছে ,
Sl No. | ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল প্রয়োজনিয় ডকুমেন্টস |
1 | ব্যাঙ্ক পাসবুক |
2 | শিক্ষাগত নথি (অ্যাডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন কার্ড) |
3 | আধার কার্ড |
4 | আবাসিক শংসাপত্র( সংশ্লিষ্ট স্কলার্শিপ নির্দেশিকায় উল্লেখিত) |
5 | জাতির শংসাপত্র( যদি থাকে) |
6 | আয় শংসাপত্র (সংশ্লিষ্ট স্কলার্শিপ নির্দেশিকায় উল্লেখিত) |
7 | স্কুল সার্টিফিকেট |
8 | মোবাইল নম্বর |
9 | পাসপোর্ট সাইজ ছবি |
I’m Sourav, (BA) Graduate. Specialized content writer. Get accurate information from Moneygita.