DNA Full form in Bengali | ডিএনএ ফুল ফর্ম কি?

DNA Full form in Bengali বা ডিএনএ ফুল ফর্ম কি? আপনি আগে কখনো না কখনো DNA এর ব্যাপারে হয়ত শুনে থাকবেন, কিংবা DNA টেস্ট এর কথাও হয়ত আগে কোথাও শুনে থাকবেন। কিন্তু আপনি কখনো কি এটা ভেবে দেখেছেন যে এই DNA আসলে কি ? কোনো DNA এত গুরুত্বপূর্ন ?

যদি এই সব উত্তর গুলি আপনি জানতে চান তাহলে আজকের এই পোস্ট টি আপনাকে আগে গিয়ে অনেক নতুন তথ্য পেতে সাহায্য করবে। কারণ আজকে আমরা DNA এর সাথে জড়িত সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। তাহলে আসুন আমরা সবার আগে এটা জেনে নিই জে DNA কী ? এবং এটা কোথায় পাওয়া যায়? 

ডিএনএ ফুল ফর্ম কি?

ডিএনএ ফুল ফর্ম হলো ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিয়িক এসিড। এই DNA এর মাধ্যমেই আমরা আমাদের পরিচয় পেয়ে থাকি। এই DNA গুলি আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমাদের শরীরের ডেভেলপমেন্ট, গ্রোথ, রিপ্রোডাকশন এর বিভিন্ন কাজের জন্য নির্দেশ প্রদান কারী  শক্তি এখান থেকেই আসে। 

ডিএনএ ফুল ফর্ম

আরো কিছু important ফুল ফর্ম নিচে দাও হলো-

ডব্লিউবিসিএস এর ফুল ফর্ম বি টি এস এর ফুল ফর্ম
নাসা ফুল ফর্ম কি?কম্পিউটার ফুল ফর্ম কি
পিএইচডি এর ফুল ফর্মসি ই ও ফুল ফর্ম

DNA কী ?

আপনি এটা তো জেনেই থাকবেন জে , আমাদের পুরো শরীর ই সেলস দিয়ে তৈরি, অর্থাৎ অসংখ্য কোষ এর দ্বারা যুক্ত রয়েছে। এই এক একটি কোষের মধ্যে DNA বা জেনেটিক কোড পাওয়া যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে একটি ব্যতিক্রম হলো শুধু মাত্র RBC ( রেড ব্লাড সেলস ) এই DNA অবস্থান করে না। 

অধিকাংশ DNA গুলি নিউক্লিয়াস এই পাওয়া যায়, যেগুলি নিউক্লিয় DNA বলা হয়। এবং এছাড়াও DNA এর একটি ক্ষুদ্র অংশ মাইটোকন্ড্রিয়া তে পাওয়া যায়, যেটাকে মাইট্রোকনড্রিয়া DNA বলা হয়। 

DNA full form in Bengali

DNA Full form হলো Deoxyribonucleic Acid। এই DNA গুলি জৈবিক অম্ল, নাইট্রোজেন নিয়ে তৈরি হয়েছে। মানুষের দেহে যে সমস্ত DNA গুলি থাকে তাদের মধ্যে 3 মিলিয়ন এর মতো অনেকগুলি স্তর বা কোড  পাওয়া যায়। 

99 % মানুষের মধ্যে প্রায় একই ধরনের DNA পাওয়া গিয়ে থাকে। এই DNA গুলি অনেকটা পেঁচানো সিঁড়ির মতো দেখতে হয়, যেগুলো আমাদের শরীরের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য গুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে। DNA কে নিউক্লিক এসিড বলা হয় কারণ বেশিরভাগ DNA গুলি নিউক্লিয়াস এই পাওয়া যায়। নিউক্লিয়াস হলো সেল এর এমন একটি অংশ যেটি সমস্ত সেল গুলিকে একসাথে কন্ট্রোল করে। 

DNA বেস

 DNA মূলত চারটি বেস নিয়ে তৈরি হয় –

  • অ্যাডেনিন ( A ),
  • গুয়ানিন ( G ),
  • থাইমিন ( T ) 
  • এবং সাইটোসিন ( S )। 

একটি মানুষের দেহের ভিতর প্রায় প্রতিটি কোষেই একই ধরনের DNA উপস্থিত থাকে। বেশিরভাগ কোষের নিউক্লিয়াস এর মধ্যে DNA পাওয়া গিয়ে থাকে এবং নিউক্লিয়াস এর অনুপাতে মাইট্রোকনড্রিয়া তে কম পরিমাণ DNA পাওয়া যায়। 

DNA এর বেস গুলি একে অপরের সাথে অর্থাৎ A এর সাথে T এবং C এর সাথে G যুক্ত হয়ে একটি একক গঠন করে, যেটি বৈজ্ঞানিক ভাষায় বেস পেয়ার নামে পরিচিত। এখনকার এক একটি বেস একটি চিনির অনু এবং একটি ফসফেটের অণু দ্বারা যুক্ত থাকে।

এক সাথে একটি বেস একটি চিনির অণু এবং একটি ফসফেট এর অণু কে নিউক্লিওটাইড বলা হয়। এই নিউক্লিওটাইড গুলি দুটি লম্বা স্ট্যান্ড এ দাঁড় করানো থাকে, যাকে ডবল হেলিক্স বলা হয়। DNA কে প্রধানত তিন টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যথা: A-DNA, B-DNA, Z-DNA। 

DNA কে আবিষ্কার করেছিলেন ? 

1869 সালে সুইস এর একজন জীব বিজ্ঞানী Johannes Friedrich Miescher শ্বেত রক্ত কণিকা নিয়ে গবেষণা করার সময় প্রথম বার এই DNA আবিষ্কার করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে জেমস ওয়াটসন এবং ফ্রান্সিস ক্রিক বিভিন্ন পরীক্ষা মূলক পদ্ধতির মাধ্যমে DNA এর ডাবল হেলিক্স এর কথা প্রকাশ্যে আনেন। 

DNA এর গঠন 

DNA কে একটি পেঁচানো সিড়ি বা একটি পাকানো মই এর রূপে কল্পনা করা যেতে পারে এবং এই পেঁচানো সিড়ি বা পাকানো মই এর মত কাঠামো টিকেই ডবল হেলিক্স বলা হয়। এটা এক ধরনের নিউক্লিক এসিড এবং নিউক্লিক এসিড গুলি তৈরি হয় নিউক্লিওটাইড এর দ্বারা।

DNA এর সমস্ত অনু গুলই নিউক্লিওটাইড নামক একক দ্বারা গঠিত এবং প্রতিটি নিউক্লিওটাইড তিনটি ভিন্ন বস্তু যেমন সুগার, ফসফেট ও নাইট্রোজেন বেস দ্বারা তৈরী। 

DNA এর যে বেসিক বিল্ডিং ব্লক গুলি আছে সেগুলি সাধারণত নিউক্লিওটাইড দ্বারা গঠিত। এই নিউক্লিওটাইড গুলি সুগার, ফসফেট এবং নাইট্রোজেনের বেস দিয়ে তৈরি। DNA এর স্ট্যান্ড গুলিকে তৈরি করতে সুগার এবং ফসফেট গুলি নিউক্লিওটাইড কে একসাথে ধরে রাখতে সাহায্য করে। এই ভাবেই adenine (A), guanine (G), cytosine (C), এবং thymine (T) নামক চারটি DNA এর বেস তৈরি হয়। 

এরপর এই চারটি বেস একসাথে হওয়ার জন্য A এর সাথে T এবং G এর সাথে S যুক্ত হয়ে যায়। যুক্ত হয়ে DNA এর ডাবল হেলিক্স গঠনে সাহায্য করে, যা পরবর্তীকালে একটি পেঁচানো সিড়ির মতো রূপ ধারণ করে। 

 আমরা জানতে পারলাম যে DNA তৈরি হতে 3 টি অনুর প্রয়োজন হয়। কিন্তু এই তিন টি অনুর মধ্যেও আবার সুগার একমাত্র এমন একটি উপাদান যার মাধ্যমে DNA এর মেরুদন্ড গঠিত হয়। এই কারণে একে ডিঅক্সিরাইবোজ বলা হয়। 

DNA কেন গুরুত্বপূর্ণ ? 

DNA শরীরের সমস্ত প্রয়োজনীয় জেনেটিক তথ্য বহন করে যার ফলে আমাদের দেহের বিকাশ, বিভিন্ন কোষের বিভাজন, প্রজনন ইত্যাদি কার্য সম্পন্ন হয়। DNA তে জেনেটিক কোড উপস্থিত থাকার জন্য আমাদের শরীরের সমস্ত প্রোটিন গুলি সংশ্লেষিত হয়।

আমাদের জীবনের ধারাবাহিকতা DNA এর জন্যই বজায় আছে এবং DNA এর মাধ্যমেই পিতামাতা থেকে সন্তান দের কাছে তাদের উত্তরাধিকার সূত্র টিও বয়ে আসছে। 

দেহের বৃদ্ধি এবং বেচেঁ থাকার জন্য আমাদের শরীরে প্রোটিন এর প্রয়োজন অনেকখানি। DNA তিন টি বেস এর মাধ্যমে আমাদের শরীরে এই প্রোটিন গুলি তৈরি করে। এবং প্রোটিন তৈরি করার জন্য একটি DNA এর সিকোয়েন্স তথ্য দরকার যা জিন নামে পরিচিত। 

এই তিনটি বেস এর এক একটি গ্রুপ একটি নির্দিষ্ট অ্যামিনো অ্যাসিডের সাথে মিশে গিয়ে প্রোটিন এর বিল্ডিং ব্লক গুলি তৈরি করে। এই প্রোটিন গুলির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিডের সংমিশ্রণ থাকে। 

প্রোটিন গুলিকে যদি ক্রমিক অনুযায়ী সাজানো হয় তাহলে দেখা যাবে এক একটি প্রোটিন আমাদের শরীরে ভিন্ন ধরনের কার্য সম্পন্ন করে এবং সেগুলি আলাদা আলাদা গঠনও তৈরি করে। 

একটি DNA থেকে কিভাবে প্রোটিন পাওয়া যায় ? 

সবার প্রথম DNA এর যে দুটি স্ট্যান্ড আছে সেগুলো আলাদা হয়ে যায়। এরপর জে বিশেষ প্রোটিন গুলি থাকে সেগুলি নিউক্লিয়াস ছাড়াই DNA এর বেস পেরিস গুলির উপর ভিত্তি করে এক একটি মধ্যবর্তী মেসেঞ্জার অনু তৈরি করে। 

এই একই প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে RNA (mRNA) এর মেসেঞ্জার অণু তৈরি হয়। এই mRNA হলো আরেক ধরনের একটি  অ্যামিনো অ্যাসিড। এগুলো প্রোটিন তৈরি করে এমন কয়েকটি cellular machinery গুলোকে বার্তা পাঠানোর জন্য নিউক্লিয়াস এর বাইরের চারপাশে ঘুরতে থাকে। 

মানব দেহের স্বাস্থ্য, রোগ এবং বার্ধক্য কালে DNA এর ভূমিকা – 

আপনার শরীরের DNA এর সম্পুর্ন একটি গঠন কে আপনার gnome (জিনোম) বলা হয়। এই একটি গঠন মোটামুটি ভাবে তিন বিলিয়ন বেস, 20000 টা জিন এবং 23 টা pairs নিয়ে গঠিত। 

আপনার শরীরের যতো গুলি DNA আছে তার অর্ধেক টা আপনি পেয়েছেন আপনার বাবার কাছ থেকে এবং বাকি অর্ধেক DNA পেয়েছেন আপনার মায়ের কাছ থেকে। অর্থাৎ আপনি আপনার পিতা মাতার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে এই DNA গুলি প্রাপ্ত করে থাকেন। এই DNA guli প্রধানত শুক্রাণু এবং ডিম্বাণু থেকে আসে। 

আমাদের শরীরের জিন গুলি জিনোম তৈরির ক্ষেত্রে খুবই কম ভূমিকা গ্রহণ করে। জিনোম তৈরিতে জিন এর মাত্র এক শতাংশ ভূমিকা থাকে এবং বাকি 99 শতাংশ জিনোম গুলি আপনার শরীর কখন, কিভাবে এবং কতটা পরিমাণ প্রোটিন তৈরি হবে এই বিষয় গুলি নিয়ন্ত্রণ করে। 

বিজ্ঞানীরা এই নন-কোডিং DNA গুলির সম্পর্কে আরো গভীরে জানবার জন্য গবেষণা জারি রেখেছেন। 

DNA এর ক্ষতি এবং মিউটেশন পদ্ধতি – 

জীব বিজ্ঞানীদের অনুমান অনুযায়ী আমাদের এক একটি কোষে প্রতিদিন প্রায় হাজার হাজার DNA এর ক্ষতি হচ্ছে। মূলত DNA রেপ্লিকেশন, ফ্রি জার্ডিকাল এবং ইউভি বিকিরণ এর বিভিন্ন ত্রুটির কারণেই এই DNA গুলির ক্ষতি হচ্ছে। 

আমাদের শরীরের অনেক ধরনের প্রোটিন আছে। যেগুলি DNA কে ক্ষতির হাত থেকে সনাক্ত এবং মেরামত করতে সক্ষম। তার মধ্যে আনুমানিক ভাবে অন্তত 5 টি DNA এর মেরামত এর পথ অনুযায়ী চলে। 

DNA সিকোয়েন্স পরিবর্তনের জন্য একটি স্থায়ী পদ্ধতি হলো মিউটেশন। আমাদের শরীরে যেভাবে প্রোটিন গুলি তৈরি হচ্ছে সেখানে DNA এর পরিবর্তন গুলি নেগেটিভ ভাবে ইমপ্যাক্ট করতে পারে। 

যদি আমাদের দেহের প্রোটিন গুলি ঠিকঠাক ভাবে সমস্ত কাজ না করে তাহলে শরীরের রোগের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। একটি একক জিনের মিউটেশন ঘটে যাওয়ার ফলে  নানান ধরনের রোগ ধরা পড়তে পারে, উদাহরণস্বরূপ বলা যায় সিস্টিক ফাইব্রোসিস ও সিকেল সেল অ্যানিমিয়া। 

ক্যান্সার হওয়ার একটি প্রধান কারণ হিসেবে এই মিউটেশন কে চিহ্নিত করা যেতে পারে। এরকম একটি  উদাহরণ হলো, যদি জিন সেলুলার বৃদ্ধির সাথে যুক্ত প্রোটিন এর জন্য কোডিং করে তাহলে দেহে কোষের মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে এবং এর ফলে কোষ গুলি বিভক্ত হতে পারে। 

এবং কিছু কিছু ক্যান্সার সৃষ্টিকারী মিউটেশন গুলি পিতা মাতার থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হয়। এছাড়া ইউভি বিকিরণ, সিগারেটের ধোঁয়া বা রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদির মতো কার্সিনোজেন গুলির সংস্পর্শে আসলে তার ফলে ক্যান্সার এর বিকাশ ঘটতে পারে। কিন্তু এটাও নিশ্চিত যে সব মিউটেশন গুলো ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে না। কিছু কিছু মিউটেশন আমাদের দেহের পক্ষে ভালো। 

এই হলো DNA এবং DNA এর সাথে যুক্ত সমস্ত তথ্য। আজকে আমরা DNA সম্পর্কে অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করলাম – DNA Full form in Bengali বা ডিএনএ ফুল ফর্ম কি। আশা রাখি আপনারা এই পোস্ট টির মাধ্যমে DNA এর বিষয় অনেক কিছু জানতে পারলেন।

1 thought on “DNA Full form in Bengali | ডিএনএ ফুল ফর্ম কি?”

Leave a Comment