অনুসারী শিল্প কাকে বলে? বৈশিষ্ট্য, উদাহরণ

আলোচ্য বিষয়: অনুসারী শিল্প কাকে বলে? অনুসারী শিল্প কী? অনুসারী শিল্পের উদাহরণ, অনুসারী শিল্পের বৈশিষ্ট্য, অনুসারী শিল্প কে কেন সহযোগী শিল্প বলা।

ভারতের ভৌগোলিক পরিবেশের একটি অন্যতম অংশ হলো ভারতীয় অর্থনৈতিক পরিবেশ। বর্তমানে নগর সভ্যতার বিকাশ ও শিল্পের বৃদ্ধির ফলে গড়ে উঠেছে বড় বড় কলকারখানা। গড়ে উঠেছে বৃহৎ বৃহৎ শিল্পাঞ্চল। ভারত বিভিন্ন দেশের ন্যায় এই শিল্পের দিক থেকে যথেষ্ট এগিয়ে রয়েছে। 

ভারতে গড়ে ওঠা বৃহৎ শিল্প গুলির মধ্যে অন্যতম হলো পেট্রোরসায়ন শিল্প, মোটর গাড়ির শিল্প। এই বৃহৎ শিল্পগুলিকে ঘিরে কিছু ছোট ছোট শিল্প গড়ে উঠেছে যেগুলোকে অনুসারী শিল্প বলা হয়। আজ আমরা আলোচনা করব এই অনুসারী শিল্প নিয়ে- অনুসারী শিল্প কাকে বলে? অনুসারী শিল্প কী?। 

পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় এরকম অনুসারী শিল্প গড়ে উঠেছে। 

এই অনুসারী শিল্পগুলি এটি বৃহৎ শিল্প কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে আবার সেই বৃহৎ শিল্পগুলিকে কাঁচামাল সরবরাহের ক্ষেত্রে সাহায্য করে থাকে। আসুন তাহলে জানা যাক অনুসারী শিল্প কাকে বলে? অনুসারী শিল্প কি

Table of Contents

অনুসারী শিল্প কাকে বলে? 

অনুসারী শিল্প কী: অনু কথাটির অর্থ হলো ক্ষুদ্র। একটি বৃহদায়তন শিল্পকে কেন্দ্র করে তার চারপাশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা গড়ে ওঠে। এই বৃহদায়তন শিল্পকে কেন্দ্রীয় শিল্প এবং এই কেন্দ্রীয় শিল্পকে ঘিরে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্পগুলিকে অনুসারী শিল্প বা সহযোগী শিল্প বলা হয়। 

অনুসারী শিল্প গুলি কেন্দ্রীয় শিল্পের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল। এই অনুসারী শিল্প বৃহদায়তন শিল্প গুলিকে প্রয়োজনের সামগ্রী সরবরাহ করে থাকে। 

Moneygita telegram chanel

অনুসারী শিল্পের উদাহরণ:

যেকোনো বৃহদাকার শিল্প কে কেন্দ্র করে এই অনুসারী শিল্প গড়ে ওঠে। পেট্রো-কেমিক্যাল বা পেট্রোরসায়ন শিল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বহু অনুসারী শিল্প। যেমন- পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় পেট্রোরসায়ন শিল্পকে নির্ভর করে পেট্রোরসায়ন শিল্পের  নিকটবর্তী অঞ্চলে প্লাস্টিক শিল্প , রং শিল্প, রাবার শিল্প হল একটি অনুসারী শিল্প।

এছাড়াও কোথাও  মোটরগাড়ি নির্মাণ শিল্প গড়ে উঠেলে, সেই মোটরগাড়ি নির্মাণ শিল্পকে ঘিরে গড়ে ওঠা কাচ শিল্প, রাবার শিল্প, টায়ার শিল্প, সিট নির্মাণ শিল্প, ব্যাটারি নির্মাণ শিল্প, ছোট-বড় যন্ত্রাংশ নির্মাণ শিল্প ইত্যাদি হলো অনুসারী শিল্পের উদাহরণ। 

অনুসারী শিল্পের বৈশিষ্ট্যাবলী:

  1. অনুসারী শিল্পের অপর নাম সহযোগী শিল্প, ডাউন-স্ট্রিম শিল্প। অনুসারী শিল্প গুলি মূলত বৃহদায়তন শিল্প (পেট্রো-কেমিক্যাল শিল্প, মোটর গাড়ি নির্মাণ শিল্প) গুলির ওপর নির্ভরশীল। 
  2. অনুসারী শিল্পগুলি কেন্দ্রীয় শিল্পের (পেট্রো-কেমিক্যাল শিল্প, মোটর গাড়ি নির্মাণ শিল্প) চারপাশে গড়ে ওঠা ছোট ছোট শিল্প কারখানা। 
  3. অনুসারী শিল্প গুলি বৃহদায়তন শিল্পগুলিকে  প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করে।

অনুসারী শিল্প গুলি মূলত যে বৃহদায়তন শিল্প গুলি কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে, সে সম্পর্কে নিচে বর্ণনা করা হলো। 

Automobile Industry of India

এখন আমরা আলোচনা করব মোটর গাড়ি নির্মাণ শিল্প সম্পর্কে। পেট্রোল, ডিজেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস, বিভিন্ন প্রকার জ্বালানি চালিত বা যন্ত্র চালিত যানবাহনকে এক কথায় ‘মোটর গাড়ি’বা ‘স্বয়ং-গতি’ যান বলা হয়। সড়কপথে চলাচলের উপযোগী এই যানবাহন গুলি দুই প্রকারের হয়। যথা-

  1. বিভিন্ন প্রকার চার চাকার বা আরো বেশি সংখ্যক চাকা বিশিষ্ট গাড়ি। যেমন- যাত্রী পরিবহনের বাস, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যবহৃত গাড়ি, বিভিন্ন ধরনের লরি, ইত্যাদি । 
  2. বিভিন্ন প্রকার দ্বিচক্র যান এবং তিন চক্র যান। যেমন: মোটরসাইকেল,স্কুটার, টেম্পো,মোপেড ইত্যাদি। 

এই সকল যানবাহন হলো মোটরগাড়ি নির্মাণ শিল্পের অন্তর্গত। বর্তমান যুগে এ মোটর গাড়ি নির্মাণ শিল্পের বিপুল প্রসার ঘটেছে সড়ক পথে,মোটরগাড়ি নির্মাণ শিল্প- এর নিদর্শন প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়। 

মোটরগাড়ি নির্মাণ শিল্পের কাঁচামাল:

মোটর গড়ি নির্মাণ শিল্পের জন্য বহু রকমের কাঁচামালের প্রয়োজন হয় । যেমন- লোহা, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, রবার, কাচ, কাঠ প্লাস্টিক ,রং, ব্যাটারি ,কাপড়, স্পঞ্জ ইত্যাদি। কিন্তু ইহাদের মধ্যে লোহা ও ইস্পাতের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। এসব বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী দিয়ে নির্মিত ইঞ্জিন, বডি,চাকা,টায়ার,টিউব,সিট,ব্যাটারি প্রভৃতি কারখানায় জোড়া লাগিয়ে নানা ধরনের মোটরগাড়ি তৈরি করা হয় বলে এই শিল্পের অপর নাম হল ‘সংযোজন ভিত্তিক শিল্প’।

স্বাধীনতার আগে ভারত কেবলমাত্র আমদানি করা যন্ত্রাংশ জুড়ে মোটরগাড়ি তৈরি করতো। কিন্তু পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ স্বাধীনতার পর ভারতে মোটর গাড়ি নির্মাণ শিল্পের ব্যাপক প্রসার ও উন্নতি ঘটে। ১৯৪৭ সালে প্রথম মুম্বাইয়ের কাছে ‘কুরলায়’ মোটর গাড়ি নির্মাণ কারখানা গঠিত হয়।

 এবং ঠিক তার পরের বছর অর্থাৎ ১৯৪৮ সালে কলকাতার কাছে উত্তর পাড়ায় হিন্দ মোটর-এ ‘হিন্দুস্তান মোটরস লিমিটেড’ এর আরেকটি কারখানা স্থাপিত হয়। বর্তমানে মোটরগাড়ি নির্মাণ শিল্প টি ভারতের  অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে রয়েছে। 

এখন ভারতে মোট চার রকমের মোটর গাড়ি নির্মিত হয়।যথা:

  1. বাণিজ্যিক যান।
  2. যাত্রী বহনকারী যান। 
  3. দ্বিচক্র ও তিন চক্র যান। 
  4. প্রতিরক্ষা যান।

ভারতে মোটর গাড়ি উৎপাদন ও ভারতীয় কিছু নির্মাণকারী সংস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো: 

বিগত কয়েক দশক ধরে ভারতে বেশ কয়েকটি মোটর গাড়ির নির্মাণ কারখানা স্থাপিত হওয়ায় ভারতে বিভিন্ন প্রকার মোটর গাড়ি উৎপাদন প্রচুর পরিমাণে অর্থাৎ দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে । যেমন :২০১০ থেকে ২০১১ সালে ভারতের প্রায় ৭.৫৩ লক্ষ্য বাণিজ্যিক যান, ( যেমন – বাস, ট্রাক, টেম্পো)। ২৯.৮৭ লক্ষ যাত্রী বহনকারী যান এবং ১ কোটি ৩৪ লক্ষ দ্বিচক্র যান তৈরি হয়েছে।

 বাণিজ্যিক যান নির্মাণকারী কোম্পানি:

  • টাটা মোটরস্ লিমিটেড।
  • মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা লিমিটেড। 
  • অশোক লিল্যান্ড । 
  • আইশার মোটরস্ লিমিটেড।
  • স্বরাজ মাজেদা লিমিটেড।

যাত্রী বহনকারী যান নির্মাণকারী কোম্পানি:

  • হিন্দুস্তান মোটরস লিমিটেড। 
  • ফিয়েট ইন্ডিয়া অটোমোবাইলস্। 
  • টাটা মোটরস লিমিটেড। 
  • মারুতি উদ্যোগ লিমিটেড। 
  • হুন্ডাই মোটর ইন্ডিয়া লিমিটেড। 

 দ্বিচক্র ও তিন চক্র যান নির্মাণকারী কোম্পানি:

  • রয়েল এনফিল্ড কোম্পানি। 
  • বাজাজ অটো লিমিটেড। 
  • কাইনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।
  • হিরো-হন্ডা মোটরসাইকেল লিমিটেড।

Petrochemical Industry of India:

পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প বলতে প্রধানত পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস গুলির দ্বারা রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সংশ্লেষের মাধ্যমে বিভিন্ন কাঁচামাল তৈরি করা হয়। যেমন- প্রোপেন, বুটেন, ইথেন, পেনটেন, বেনজল, ইথাইনল, মিথেন, হেক্সেন। এই পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পে প্রধানত আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত দ্রব্য যেমন- প্লাস্টিক রং, কৃত্রিম রবার, কীটনাশক, আঠা, ওষুধ, বিভিন্ন সুগন্ধি জাতীয় এগুলি কাঁচামাল তৈরি করা হয়ে থাকে।

পেট্রো-কেমিক্যাল বা পেট্রো-রসায়ন শিল্পের গুরুত্ব:

আধুনিক শিল্প সভ্যতার অন্যতম প্রধান রূপকার হল এই পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প। বিভিন্ন রকমের রাসায়নিক শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহ করে থাকে। তাই সমগ্র রাসায়নিক শিল্পের মধ্যে এই শিল্পের গুরুত্ব তুলনামূলকভাবে খুবই বেশি। বর্তমানে  অর্থনৈতিক দিক থেকে এই পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের গুরুত্ব ক্রমশ বেড়েই চলেছে এবং এই শিল্পকে ভিত্তি করে বহু শিল্প  গড়ে উঠেছে।

যেহেতু পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের ওপর নির্ভর করে একাধিক  শিল্প গড়ে উঠেছে এই কারণে এই শিল্প কে ‘সানরাইজ ইন্ডাস্ট্রি’ বা ‘ সূর্যোদয় শিল্প’ বলা হয়। তবে উল্লেখ্য যে বর্তমানে পেট্রোকেমিক্যাল দ্রব্য ও পেট্রোকেমিক্যাল কারখানা থেকে উৎপন্ন বিষাক্ত গ্যাসীয় পদার্থ পরিবেশের সাথে মিশে বায়ু দূষণ, জল দূষণ, মাটি দূষণ ঘটাচ্ছে।

তাই উন্নত দেশগুলি পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প গড়ে তোলার প্রতি অনাগ্রহী হয়ে চলেছেন । যেহেতু পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প ক্রমশ পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে তাই পরিবেশ সচেতন মানুষদের বক্তব্য পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পকে ‘সানরাইজ ইন্ডাস্ট্রি’ বা ‘সূর্যোদয়ের  শিল্প’ না বলে ‘সানসেট ইন্ডাস্ট্রিজ’ বা ‘সূর্যাস্তের শিল্প’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। 

   তবে যাই হোক ,এই পেট্রো কেমিক্যাল শিল্পকে ঘিরে বহু অনুসারী শিল্পেরও বিকাশ ঘটেছে। পেট্রোকেমিক্যাল দ্রব্যাদি উৎপাদনের সময় বিভিন্ন রকমের সামগ্রী উৎপন্ন হয়। এবং এই সামগ্রীগুলির উপর ভিত্তি করেই অনুসারী শিল্প গুলি গড়ে উঠেছে। পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পে ব্যাপক পরিমাণ মূলধন বিনিয়োগ করা হয়। পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পে বহুল পরিমাণ বিনিয়োগের ফলে এই শিল্পকে ‘আধুনিক শিল্প দানব’ও বলা হয় । তবে যেসব অঞ্চলে এই শিল্পের বিকাশ  হয় সেখানে শিল্পায়নের পথও ক্রমশ প্রশস্ত হয়।

ভারতে পেট্রো কেমিক্যাল শিল্পের বিকাশ:

আমরা আগেই জেনেছি পেট্রোলিয়াম শিল্প হল আধুনিক শিল্পের  অন্যতম প্রধান রূপকার। ভারতে পেট্রো কেমিক্যাল শিল্পের সূচনা হয় ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের পর। তবে উন্নত দেশগুলিতে এই পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের সূচনা অনেক আগেই ঘটে গিয়েছিল। ভারতে প্রথম পেট্রো কেমিক্যাল কারখানা গড়ে ওঠে মহারাষ্ট্রের ট্রমবেতে ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে।

এই কারখানাটি গড়ে ওঠে ‘ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেড’ নামক একটি বেশ সরকারি সংস্থার উদ্যোগে। এরপর মহারাষ্ট্রের ‘থানে’ নামক স্থানে ভারতের দ্বিতীয়তম পেট্রোকেমিক্যাল কারখানা স্থাপিত হয় ১৯৬৮ সালে। এই কারখানা টি  হল ‘ন্যাশনাল অর্গানিক কেমিকাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’।

এরপর ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের অধীনস্থ সংস্থা ‘ ইন্ডিয়ান পেট্রোকেমিক্যাল কর্পোরেশন’-এর অধীনে গুজরাতের ভাদোদরা বা বরোদা -র নিকটবর্তী জওহরনগরে ভারতের তৃতীয়তম পেট্রোকেমিক্যাল কারখানা স্থাপিত হয়। প্রায় একই সময়ে তামিলনাড়ুর তুতিকোরিন-ও একটি পেট্রোকেমিক্যাল কারখানা স্থাপিত হয়। এরপর থেকে ভারতে পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের বিকাশ খুব দ্রুত হতে থাকে।

১৯৭৪ সালে অসমের বঙ্গাইগাঁও, ১৯৭৭ সালে গুজরাটের জামনগরে ,১৯৯৬ সালে কর্নাটকের ম্যাঙ্গালোরে ,এবং ২০০২ সালে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় পেট্রো কেমিক্যাল কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে ভারতে এই শিল্পের বিস্তৃতিকরণ ঘটতে থাকে। ভারতের বৃহত্তম পেট্রো কেমিক্যাল প্রকল্পটি হল গুজরাটের জামনগর পেট্রোকেমিক্যাল কারখানা। 

ভারতের মোট পাঁচটি অঞ্চলে এই পেটকেমিক্যাল শিল্পের বিকাশ ঘটেছে এগুলি হল-

  1.  পশ্চিমাঞ্চল: গুজরাটের জামনগর, গান্ধার, মহারাষ্ট্রের মুম্বাই,নাগোথানে, পটলডাঙ্গা।
  2. দক্ষিণাঞ্চল: তামিলনাড়ু তুতিকোরিন, মানালি, কর্নাটকের ম্যাঙ্গালোর । 
  3. পূর্বাঞ্চল: পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া। 
  4. উত্তর পূর্বাঞ্চল: অসমের বঙ্গাইগাঁও। 

উত্তরাঞ্চল: উত্তরপ্রদেশের আওরাইয়া, হরিয়ানার পানিপথ, পাঞ্জাবের লুধিয়ানার নিকট পায়াল।

উপরে বিশ্লেষিত সমস্ত তথ্য থেকে আশা করি আপনারা অনুসারী শিল্প কাকে বলে? এবং অনুসারী শিল্প কী? জানতে পেরেছেন। অনুসারী শিল্পের পাশাপাশি অনুসারী শিল্প গুলি যে বৃহদায়তন শিল্প গুলি কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে, পেট্রো-কেমিক্যাল শিল্প, মোটর গাড়ি নির্মাণ শিল্প ইত্যাদি সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে অবগত হয়েছেন। 

এবং এই তথ্যগুলি (অনুসারী শিল্প কাকে বলে? অনুসারী শিল্প কী?) আপনাকে বিশেষভাবে সাহায্য করেছে। বর্তমান ভারতে এই সমস্ত শিল্পের প্রচুর পরিমাণে প্রসার ঘটেছে এবং এই শিল্পগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠার যে অনুসারী শিল্প গুলি তারও ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। 

অনুসারী শিল্প গুলি এই বৃহদায়তন শিল্প গুলিকে প্রয়োজনের সামগ্রী গুলো সরবরাহ করে থাকে। জামশেদপুর, লখনৌ ,জাহীরাবাদ পান্থনগর, পুনে, মাহালি, গুরগাঁও, ব্যাঙ্গালোর, চেন্নাই,মহারাষ্ট্র, গুজরাট, তামিলনাড়ু, হরিয়ানা প্রভৃতি শিল্পাঞ্চল গুলি ভারতের মোটর গাড়ি নির্মাণ শিল্পের প্রসার ঘটিয়ে চলেছে পাশাপাশি পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের ও ব্যাপক বিস্তার ঘটিয়েছে।

কোন শিল্পকে সহযোগী শিল্প বলা হয়?

কোনো বৃহদায়তন শিল্পকে ঘিরে গড়ে ওঠা অনুসারী শিল্প গুলি ওই বৃহদায়তন শিল্পের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহ করে এ কারণে অনুসারী শিল্পকে সহযোগী শিল্প বলা হয়।

ভারতে গড়ে ওঠা একটি অনুসারী শিল্পের উদাহরণ দাও?

ভারতের পূর্বাঞ্চলে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় পেট্রোরসায়ন শিল্পকে ঘিরে গড়ে উঠেছে একাধিক অনুসারী শিল্প। যেমন: রাবার শিল্প, রং শিল্প, প্লাস্টিক শিল্প।

কোন শিল্পকে আধুনিক শিল্প দানব বলে?

যেহেতু পেট্রো-কেমিক্যাল শিল্পে ব্যাপক মূলধন বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়, এজন্যই বর্তমানে পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পকে আধুনিক শিল্প দানব বলে।

ভারতের বৃহত্তম পেট্রো-কেমিক্যাল প্রকল্প কোনটি?

বর্তমানে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত গুজরাটের জামনগর কারখানা টি হল ভারতের বৃহত্তম পেট্রো-কেমিক্যাল প্রকল্প। এটি ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত হয়।

ভারতে প্রথম কোথায় পেট্রোকেমিক্যাল কারখানা স্থাপিত হয়?

ভারতে পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের সূচনা ঘটে ১৯৬০ এর পর। ১৯৬৬ সালে মহারাষ্ট্রের ট্রম্বেতে প্রথম পেট্রোকেমিক্যাল কারখানা স্থাপিত হয়। ‘ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া’ লিমিটেড সংস্থার উদ্যোগে এই কারখানা গড়ে ওঠে।

কোন কোন অনুসারী শিল্প বৃহদায়তন শিল্পকে ঘিরে গড়ে ওঠে?

অনুসারী শিল্প গুলি যে বৃহদায়তন শিল্প গুলি কে ঘিরে গড়ে ওঠে, তা হল পেট্রোকেমিক্যাল বা পেট্রোরসায়ন শিল্প এবং মোটর গাড়ি নির্মাণ শিল্প ।

অন্যান্য পোস্ট:

Leave a Comment